সোমবার, ১৫ই মে, ২০১৭ ইং ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ইত্যাদির টাকায় মেয়ের বিয়ে দিতে চান হেলাল

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৬

IMG_0183 copyনিউজ ডেস্ক (আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া.কম) : জন্ম থেকেই অন্ধ হেলাল মিয়া (৫৫)। কিন্তু দৃষ্টিহীনতার তার গানের প্রতিভাবে দমিয়ে রাখতে পারেনি। গানকে সঙ্গী করে হেলাল মিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন তার জীবন সংগ্রাম। জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক নয় বরং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামের সঙ্গীতের রাজা হিসেবেই ব্যপক পরিচিত এই হেলাল মিয়া। হেলাল মিয়া ছাড়াও তার পরিবারের আরও ছয় সদস্য জন্ম থেকেই অন্ধ। কিন্তু তারা কেউই ভিক্ষাবৃত্তি না করে জিবীকার জন্য বেছে নিয়েছেন সঙ্গীতকে।
গান নিয়েই হেলালের সব ধ্যান-ধারণা। গান পাগল হেলাল মিয়া সরাক্ষণই গান নিয়ে ভাবেন। মারফতি, মুর্শিদী, কাওয়ালী আর বিচ্ছেদের গানই বেশি করেন হেলাল ও তার পরিবার। তবে লোকগীতিতেও ভালো সুর তুলতে পারেন তারা।
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চে গান-বাজনা করেন হেলাল ও তার পরিবার। গানের সঙ্গে কেউ বাজান হারমোনিয়াম, কেউ করতাল আবার কেউবা ঢোল। চোখে দেখতে পাওয়া একমাত্র মেয়ে শারমিনই এখন তাদেরকে গান পরিবেশন করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর মুক্ত মঞ্চে নিয়ে আসেন। গান শুনে দর্শক-শ্রোতারা খুশি হয়ে যা দেন তাতেই চলে যায় হেলালের সংসার।
অন্ধ হেলাল জানান, ১২ বছর বয়স থেকেই গান-বাজনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের ওস্তাদ শাহনূর শাহ্ এর কাছ থেকে গানের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপর থেকেই তিনি বিভিন্ন জায়গায় গান-বাজনা করে বেড়ান। তিনি ছাড়াও তার চার ছেলে, এক মেয়ে ও এক নাতনী জন্ম থেকেই অন্ধ। কিন্তু পরিবারের এসব অন্ধ সদস্যদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি না করিয়ে নিজেই তাদেরকে গানের তালিম দিয়েছেন। সম্প্রতি হেলালের জন্মান্ধ এই পরিবারটিকে নিয়ে ইত্যদিতে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ইত্যাদির পক্ষ থেকে হেলালকে দেয়া হয় দুই লাখ টাকা। এই টাকা হেলাল তার মেয়ে শারমিনের বিয়ের খরচের জন্য ব্যাংকে রেখে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে হেলাল মিয়া বলেন, আমার ছোট্ট একটি ঘর ছাড়া আমার কোনো সম্পত্তি নেই। তাই আমি ইত্যাদি থেকে পাওয়া দুই লাখ টাকা ব্যাংকে রেখে দিয়েছি আমার মেয়ের বিয়ে দেয়ার জন্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্ধ হেলাল মিয়া ও তার পরিবার ভিক্ষাবৃত্তির বদলে গানের মাধ্যমে সমাজে তাদের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো ধরণের সুযোগ সুবিধ পাননি দৃষ্টিহীন এই পরিবারটি।

এ জাতীয় আরও খবর

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত করায় বখাটে যুবকের কারাদন্ড
  • বোমা মেরে মানুষ মারার অধিকার কারো নেই-খাদ্য মন্ত্রী
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশের এসআই ও ২ সোর্সের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
  • ইবোলা আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে
  • আখাউড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস : উৎকোচ ছাড়া মিলেনা গ্রাহক সেবা
  • বাংলা বর্ষ বরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শোভাযাত্রা