অমর একুশে গ্রন্থমেলার পর্দা উঠছে সোমবার
অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে বই প্রেমীদের। বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬-র পর্দা উঠছে কাল সোমবার। লাখো বই প্রেমী, কবি ও সাহিত্যিকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক বাংলা একাডেমি এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলায় স্টল নির্মাণ, বইয়ের পসরা সাজানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে এবারের গ্রন্থমেলার অন্যতম আকর্ষণ বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী। তাই মেলার মূল থিম নির্বাচন করা হয়েছে ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী’।
সোমবার বিকেল ৩টায় একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামনের সভাপতিত্বে বিশ্বের দীর্ঘ সময় ব্যাপ্ত এ গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ব্রিটিশ কবি ও জীবনানন্দ অনুবাদক জো উইন্টার, চেক প্রজাতন্ত্রের লেখক-গবেষক রিবেক মার্টিন, আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সমিতির (আইপিএ) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড ডেনিস পল শার্কিন এবং জোসেফ ফেলিক্স বুরঘিনো। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করবেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা এবং নজরুলসংগীত পরিবেশন করবেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পৌত্রী অনিন্দিতা কাজী।
গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৫ প্রদান করবেন এবং সৈয়দ শামসুল হক রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা বইয়ের ব্রেইল ও অডিও সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করবেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আধুনিক বাংলা অভিধান তুলে দেয়া হবে। এর পর মেলার পরিদর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা।
মাসব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং ২১-শে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এ গ্রন্থমেলা। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বইসমূহ ৩০ শতাংশ কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বইসমূহ ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি করা হবে।
পরিধি বেড়েছে মেলার
প্রথমবারের মতো উপমাহাদেশের সব চেয়ে বৃহৎ মেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলা একাডেমি। গতবার যেখানে মেলার আয়তন ছিল ১ লাখ ৭৮ হাজার বর্গফুট। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ বর্গফুট। একাডেমিতে ৮২ প্রতিষ্ঠানকে ১১১ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩২০ প্রতিষ্ঠানকে ৫৪০ ইউনিট সর্বমোট ৪০২ প্রতিষ্ঠানকে ৬৫১ ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ১৪ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
১৫টি গুচ্ছে সজ্জিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ
এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশকে এবার ১৫টি গুচ্ছে সজ্জিত করা হয়েছে। চত্বরগুলোর নামকরণ করা হয়েছে- ভাষা শহিদ আবুল বরকত, আবদুস সালাম, শফিউর রহমান, রফিকউদ্দিন আহমদ, আবদুল জব্বার, শহিদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, আলতাফ মাহমুদ, সিরাজুদ্দীন হোসেন, ডা. আলীম চৌধুরী, সেলিনা পারভীন, শিশুসাহিত্যিক সাজেদুল করিম, হাবীবুর রহমান, ফয়েজ আহ্মদ এবং রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই-এর নামে।