g সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন : অনিশ্চিত ২৫০ শিক্ষার্থীর সঙ্গীত প্রশিক্ষণ | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মঙ্গলবার, ১লা আগস্ট, ২০১৭ ইং ১৭ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন : অনিশ্চিত ২৫০ শিক্ষার্থীর সঙ্গীত প্রশিক্ষণ

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ২০, ২০১৬

---

2016_01_19_17_13_48_ytQn6rM2Ns9DsG4qX1csFlFHyRyJc4_originalতুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক মাদরাসা ছাত্র হত্যার ঘটনায় সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলায় শিক্ষার্থীদের গানের যন্ত্র পুড়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে প্রশিক্ষণ। এতে এ প্রতিষ্ঠানের ২৫০ শিক্ষার্থীর সঙ্গীত প্রশিক্ষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাদের চোখে-মুখে এখন শুধু হতাশা। কবে শুরু হবে আবারো প্রশিক্ষণ, এই অপেক্ষা এখন তাদের। একই সঙ্গে তাদের দাবি অচিরেই প্রাণের এই সংগঠনটি চালু করে প্রশিক্ষণ শুরু করা হোক। সঙ্গীত প্রশিক্ষকরাও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন দ্রুত এই সংগঠনটিকে মেরামতের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ে অবস্থিত আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন। গেট থেকে ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে আলাউদ্দিন খাঁ-এর ব্যবহৃত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের পুড়ে যাওয়া অংশ ও আসবাবপত্র। আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতি সংরক্ষণ করতে নির্মিত জাদুঘরটিও তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি। রোষের আগুনে পুড়েছে জাদুঘরটিও। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আলাউদ্দিন খাঁর ব্যবহৃত জায়নামাজ, গালিচা, সরোদ, তানপুরা, বেঙ্গুর, এসরাজ, তবলা, সেতার, চিঠি ও তার দুর্লভ কিছু ছবি। যা আর কখনো ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।শুধু আলাউদ্দিন খাঁ এর ব্যবহৃত স্মৃতিই নয়। এছাড়া আরো পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এখানকার সঙ্গীত প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা ১০টি হারমোনিয়াম, ২৪ জোড়া তবলা, ঢোল, পাকুয়াস, বাঁশি, সরোদ, তানপুরা, এসরাজ, সেতার, বেঙ্গুরসহ সঙ্গীতের কাজে ব্যবহৃত নানান যন্ত্রপাতি। এছাড়াও ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয় সঙ্গীতাঙ্গনের বিল্ডিং, এসি, সিলিং ফ্যান, টেবিল, চেয়ার, আলমিরা, বই ও অফিসের কাগজপত্রে। সবকিছু মিলিয়ে এই সঙ্গীতাঙ্গনের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন আলাউদ্দিন খাঁ কর্তৃপক্ষ।সুরসম্রাট আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের শিক্ষার্থী মো. মেহফুজ আল ফাহাদ বলেন, যখন টিভিতে দেখেছি এই সঙ্গীতাঙ্গন পুড়ে যাচ্ছে তখন খুব খারাপ লেগেছে। এই সংগীত প্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের বিচার চাই। পাশাপাশি দ্রুত এর সংস্কার করে ২৫০ শিক্ষার্থীর প্রশিক্ষণ শুরুর দাবি জানাই সরকারের কাছে।

সঙ্গীত প্রশিক্ষক রোনাক সুলতানা বলেন, এটি ছিল সুরের জায়গা। এখানে হামলাকারীরা অসুরের কাজ করেছে। তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান জানান, এখন ২৫০ সঙ্গীত শিক্ষার্থীর প্রশিক্ষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারব তা বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রুত এই সঙ্গীত প্রতিষ্ঠানটির সংস্কার করে আবারো প্রাণচঞ্চল করা হোক।

এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। তারা আশ্বস্ত করেছেন দ্রুতই এর সংস্কার কাজ শুরু করার। এছাড়াও এখানে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনায় অজ্ঞাত ৫’শ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও মাদরাসা ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে মাদরাসা ছাত্র মো. মাসুদুর রহমান নিহত হয়। মাসুদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। কয়েকশ মাদরাসা ছাত্র শহরের টিএ রোড, কুমারশীলের মোড়, লোকনাথ ট্যাঙ্কের পাড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে।

এ সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের ব্যাংক এশিয়া, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র এবং সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে ভাঙচুর করে ও আগুন দেয়। তারা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন সঙ্গীত যন্ত্রাংশও পুড়িয়ে দেয়।

বাংলামেইল

এ জাতীয় আরও খবর