থ্রিজি চালুর পরও বাড়েনি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী
---
তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল পরিষেবা থ্রিজি চালুর পরও দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়েনি। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির এ বিষয়টিকে সতর্কবার্তা হিসেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি না হলে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী না বাড়ার বিষয়ে মোবাইল অপারেটররাও অবহিত। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তারা। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি এবং প্রয়োজনীয় কনটেন্ট ও হ্যান্ডসেট ক্রেতাদের নাগালে আনতে তারাও কাজ করছে বলে জানা গেছে।
গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর থ্রিজির অনুমোদন দেওয়ায় মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে বিটিআরসি এবং দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু ছয় মাসের প্রতিবেদনে উল্টো চিত্র দেখা যায়।
মোবাইল অপারেটরসহ সব ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিটিআরসিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার ৫৯২ জন। অথচ গত বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ১৮ জন। ছয় মাসে ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে এক লাখ ২০ হাজার ৪২০ জন। মূলত গ্রাহক কমেছে মোবাইল ইন্টারনেট ও ওয়াইম্যাক্সের।
থ্রিজি চালুর পর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে গ্রাহক সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও পরের মাস থেকেই কমতে থাকে। অথচ এ ছয় মাসে দেশে মোবাইল সংযোগ বেড়েছে ৫৩ লাখ সাত হাজার।
তবে সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক এ ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর চেয়ে এক বছর আগে থ্রিজি চালু করে টেলিটক। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর থ্রিজি চালু করার সময় তাদের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ। ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত টেলিটকের গ্রাহক দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গ্রাহক সংখ্যায় সব অপারেটরের চেয়ে পিছিয়ে থাকা সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতিতে থ্রিজি প্রভাবকের ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন মুজিবুর রহমান।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা জব্বার মনে করেন, দুটো কারণে ইন্টারনেট প্রবৃদ্ধিতে স্থবিরতা হতে পারে। প্রথম কারণ হচ্ছে, শুরুর দিকে থ্রিজির ঢাকাকেন্দ্রিকতা। আবার কোন প্রতিষ্ঠানের সেবা বেছে নেবেন, এ বিষয়ে গ্রাহকদের সিদ্ধান্তহীনতাও একটা কারণ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে কনটেন্টের অপ্রতুলতাকে চিহ্নিত করেন মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘থ্রিজি ব্যবহার হচ্ছে মূলত মুঠোফোনে। আর মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন প্রধানত তরুণেরা। কিন্তু তরুণদের আকৃষ্ট করার মতো কনটেন্ট এখানে নেই। অপারেটর ও সংশ্লিষ্টরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন আকর্ষণীয় নতুন কনটেন্ট তৈরিতে। কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে সহায়ক নীতিমালাও নেই।’
কনটেন্ট স্বল্পতার বিষয়ে একমত গ্রামীণফোনের করপোরেট কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান তাহমীদ আজিজুল হক। এর পাশাপাশি তিনি যথোপযুক্ত হ্যান্ডসেটের অপ্রতুলতার কথাও উল্লেখ করলেন।
বাংলালিংকের সিনিয়র ম্যানেজার (পিআর ও মিডিয়া) শেহজাদ হোসেনও দ্বিমত করলেন না এ বিষয়ে। তিনি জানালেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী না বাড়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
মোস্তাফা জব্বারের বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত বাংলাদেশ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসানও। ইন্টারনেট-সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। শামীম আহসান বলেন, ‘আমি নিজেও ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে বিরক্ত। কোম্পানিগুলো যতটা ফ্রিকোয়েন্সি কিনেছে তার চেয়ে বেশি মানুষকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে মানসম্পন্ন সেবা পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে না।’
এ জাতীয় আরও খবর
- শিগগিরই আসছে মাইক্রোসফটের স্মার্টওয়াচ
- কলেজের ফটক বন্ধ করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ
- উইন্ডিজকে ১১৫ রানে আটকে ফেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা
- মৃত্যুর আগে মায়াকোভিস্ক
- বদলে যাচ্ছে নকিয়ার নাম!
- বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মর্টেনের পরামর্শ
- দুনিয়া বলছে দেশে মানবাধিকার নেই: খালেদা জিয়া
- যেভাবে বাড়াবেন ক্রোম ব্রাউজারের গতি
- রাজনৈতিক দলগুলোর ওয়েবসাইট যেভাবে আছে
- যে প্রযুক্তি প্রশ্নের উত্তর জানা ভালো
- উড়ন্ত পাখির ওজন কত?
- ২৪ ঘণ্টা ফেসবুক বন্ধ!