অফিসে ঘুমালেই বেতনের সঙ্গে পাবেন বোনাস!
অনেকেই সকাল সকাল উঠে কোনো মতে নাস্তা খেয়েই অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়েন। এ দিকে অফিসে গিয়ে সারাদিন ঢুলুঢুলু চোখ। অনেকেই ভাবেন যদি অফিসেই একটু ঘুমিয়ে নেয়া যেত? ধরুন, দুপুরের খাবার খেয়ে অফিসেই একটু ঘুম দিলেন। তার জন্য আপনার বস তো কড়া কথা বললেনই না, বরং বাহবা দিলেন। এমনকি বেতনের সঙ্গে পেলেন বেশ কিছু বোনাসও। না, অবাক হওয়ার কিছু নেই, জাপানের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে এখন এটাই নিয়ম।
চিকিৎসকদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। কিন্তু কাজের চাপেই হোক বা অন্যান্য কারণে, বেশিরভাগ মানুষই আট ঘণ্টার থেকে অনেকটাই কম ঘুমান। পৃথিবীর বহু ছাত্র ও চাকুরিজীবী মানুষই পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ভোগেন। জাপানের মানুষও এই সমস্যার শিকার। এদিকে একজন জাপানি নাগরিক প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৩৬ মিনিট কম ঘুমিয়ে থাকেন। আর সেই দিকে চিন্তা করেই কর্মচারীদের পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য বোনাস দিচ্ছে জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখেই জাপানে একাধিক অফিস কর্মীদের পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করছে। এমন কি জাপানের একটি ইভেন্ট অর্গানাইজার প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের জন্য এনেছে বিশেষ বোনাস। ৬ ঘণ্টার বেশি ঘুমালেই বেতনের সঙ্গে এই অতিরিক্ত টাকা পাবেন কর্মীরা। নেক্সবিট নামের জাপানের এক আইটি ফার্মও কর্মীদের পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। অফিসের মধ্যেই তারা বানিয়েছে একটি বিশেষ স্লিপিং রুম। কাজের ফাঁকে কোনো কর্মী চাইলেই সেই ঘরে গিয়ে এক ঘুম দিয়ে আসতে পারেন।
তবে একটাই শর্ত, এই ঘরে ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। তাছাড়া ওভারটাইম করাও নিষিদ্ধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ৯ টার মধ্যে অফিস থেকে না বের হলে বরং রেগে যাবেন কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকদের মতে, কম ঘুমানোর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। প্রভাব পরে স্মৃতিশক্তিতে। এর সঙ্গে সঙ্গে শরীরের পেশিও দুর্বল হতে থাকে।
জাপানের একাধিক প্রতিষ্ঠানের মতে, কম ঘুমিয়ে বেশি কাজ করতে গেলে ক্ষতি প্রতিষ্ঠানই। কারণ, কোনো কর্মী নিয়মিতভাবে কম ঘুমালে, সে সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না।
তাছাড়াও ঘুম কম হলে কমে যায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই কর্মীদের শরীর খারাপের ফলে ছুটিও নিতে হবে বেশি। আর সেই কারণেই প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন উদ্যোগ।