বিএনপি সাংসদের ভাতিজা নিখোঁজ হওয়ার ৪৮ ঘন্টা পর জীবিত উদ্ধার
আরিফুল ইসলাম সুমন, সরাইল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূইঁয়ার ভাতিজা মাসুদ রানা বাবু (৩৮) নিখোঁজ হওয়ার ৪৮ ঘন্টা পর হাত-পা বাঁধা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৮ জুন) দিবাগত রাত পৌনে নয়’টায় সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে সরাইল ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এলাকায় নির্জন স্থান থেকে বাবুকে উদ্ধার করা হয়। মাসুদ রানা বাবু উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের জহির মিয়ার ছেলে।
এরআগে গত বুধবার সন্ধ্যা ছয়’টার দিকে পরমানন্দপুর নৌঘাট এলাকা থেকে বাবু নিখোঁজ হন। বৃহস্পতিবার সকালে বাবুর স্ত্রী প্রমনী বেগম তাঁর স্বামীকে গুম করা হয়েছে বলে দাবি করে থানায় প্রথমে জিডি ও পরে গুমের মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পরমানন্দপুর গ্রামের জবর আলীর ছেলে জাকির হোসেন ও আবজর আলীর ছেলে বাছির ভূইঁয়াকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সরাইল থানার ওসি মফিজ উদ্দিন ভূইঁয়ার নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনে ৪৮ ঘন্টা পর হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় সড়কের পাশ থেকে বাবুকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে শুক্রবার রাত সোয়া দশটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডে পুলিশ প্রহরায় অচেতন বাবুর চিকিৎসা চলছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজী শামসুল আরেফিন এ প্রতিবেদককে বলেন, অচেতন অবস্থায় রাত নয়’টায় তাকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। প্রাথমিক পরিক্ষায় দেখা যায় রোগীকে চেতনানাশক (ডায়াজিপাম) জাতীয় কোনো স্প্রে’র মাধ্যমে অজ্ঞান করা হয়েছে। ধস্তাধস্তির কারণে রোগীর শরীরের নানা অংশে সামান্য ফুলা জখম রয়েছে। বর্তমানে রোগী অজ্ঞান অবস্থায় আছে। তবে রোগী ঝুঁকিমুক্ত। চিকিৎসা চলছে, আশা করি সকাল নাগাদ রোগীর জ্ঞান ফিরবে।
অপরদিকে রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বামীর পাশে উপস্থিত বাবুর স্ত্রী প্রমনী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, পূর্ব বিরোধের জেরে তারা আমার স্বামীকে গুম করে চিরতরে শেষ করতে চেয়েছিল। পুলিশের তৎপরতা ও সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়ায়, তারা এতে সফল হতে পারেনি।
এ ব্যাপারে রাতে যোগাযোগ করা হলে সরাইল থানার ওসি মফিজ উদ্দিন ভূইঁয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, বাবুর স্ত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। বাবুকে উদ্ধারে পুলিশের সকল চেষ্টার বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়।