ছয়লেনে উন্নীত হচ্ছে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক : উচ্ছেদ আতঙ্কে হাজারো মানুষ
রংপুর প্রতিনিধি : প্রায় বারো হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।
সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি’র আর্থিক সহযোগিতায় এ কাজ বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য সুখকর বার্তা রয়ে আনলেও ছয় লেন হওয়ার খবরে উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন লালমনিরহাট-রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের দুইধারের হাজারো মানুষ।
রংপুর -ঢাকা মহাসড়কের সাতমাথা এলাকায় মহাসড়কের পাশে ঘর তুলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন রিক্সা চালক আযম হাবিব। তিনি জানান, তিস্তার ভাঙ্গনে সব যাওয়ার পর তিনি কয়েক বছর আগে এখানে আশ্রয় নেন। চারলেন হলে তো উচ্ছেদ হতে হবে। তাহলে কোথায় যাবেন তিনি,এ প্রশ্ন তার?।
অপর রিক্সা চালক হাসমত আলী বলেন, চারলেন হওয়ার খবর শোনার পর থেকে পরিবার নিয়ে আতংকে আছেন। তিনি উচ্ছেদের আগে পূর্ণবাসনের দাবী জানান।
মহাসড়কের রংপুরের কাউনিয়া বাসস্ট্যানের দক্ষিণে রয়েছে মুচিপাড়া। এখানে সড়কটি ঘেষে শতাধিকেরও বেশি মানুষ ঘর তুলে দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করে আসছেন। এখানকার কয়েকজন নারী পুরুষও উচ্ছেদের আগে পূর্ণবাসনের দাবী জানিয়েছেন।
এছাড়াও নব্দীগঞ্জ, মীরবাগ, বেইলী ব্রিজ, তিস্তাসহ মহাসড়কের পাশে বসবাসতরত প্রতিটি মানুষ আছেন উচ্ছেদ আতঙ্কে। তারা আগে পূর্ণবান চান, পরে উচ্ছেদ।
জানা যায়, তেরোটি প্যাকেজের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ এ জাতীয় মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করা হবে। মহাসড়কের এ অংশে চুক্তির আওতায় ৭টি সেতু, ১৭টি কালভার্ট, কড্ডা এলাকায় ১ ফাইওভার, ৫টি আন্ডারপাস এবং ১২টি বাস-বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ছয় লেনের পাশাপাশি মহাসড়কের দু’পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য মূল সড়ক থেকে সামান্য নিচুতে দুটি সংরতি লেন থাকবে। প্রকল্পের আওতায় থাকবে হাটিকুমরোলে একটি ইন্টারসেকশন, এলেঙ্গা, কড্ডার মোড় ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে থাকবে তিনটি ফাইওভার। ছোট-বড় সেতু থাকবে ২৬টি, রেলওয়ে ওভারপাস থাকবে একটি, কালভার্ট থাকবে ১৬১টি, আন্ডারপাস ৩৯টি এবং ফুট ওভারব্রিজ থাকবে ১১টি। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
ক্ষেত মজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রফিকুল ইসলাম জানান, মহাসড়কের পাশে তারাই বসবাস করছে যাদের কিছুই নেই। তাদের পুর্ণবাসন করে উচ্ছেদ করা হউক।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক এম এ হক আকরাম জানান, মহাসড়কের দুই ধারে হাজারো ভূমিহীন মানুষ বসবাস করছেন। উচ্ছেদের আগে তাদের পূর্ণবাসন জরুরী হয়ে পড়েছে।
তবে এই প্রকল্পের নিবার্হী প্রকৌশলী ম.আফিদ হোসেন জানালেন,বিধি অনুযায়ী ভুমিহীনদের সরে যাওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সরকার ও এডিবি কর্তৃক বরাদ্দকৃত ক্ষতিপুরণ সবাইকে দেওয়া হবে। এতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।