‘শুক্রবারই হতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার’
নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, শুক্রবারই তা জানা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, এবার নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় নতুন কোনো মুখ নাও আসতে পারে।নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কালকে, কালকের পরে নির্বাচনকালীন সরকার হবে।’তার উত্তর শুনে সাংবাদিকরা জানতে চান, শুক্রবারই মন্ত্রিসভার পুনর্গঠন হচ্ছে কি না। জবাবে মুহিত বলেন, ‘মনে হয় হচ্ছে।’
মন্ত্রিসভায় নতুন করে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না- এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বোধ হয় হচ্ছে না।’সাংবাদিকরা আবারও এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মুহিত বলেন, ‘মোটামুটি নিশ্চিত। কারণ সরকারটা তো কোয়ালিশন সরকার। এমন কোনো সদস্য নেই যাকে দেওয়ার দরকার আছে। সুতরাং আমার মনে হয় না কোনো রকম অ্যাডিশন হতেই হবে।’চারজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের মন্ত্রিত্ব থাকবে বলেও জানান মুহিত।তিনি বলেন, ‘তারা (পদত্যাগপত্র দেওয়া চার মন্ত্রী) এখনও আছেন, একসেপ্ট করতে হবে তো। একসেপ্ট সম্ভবত কালকে হবে। আজকে রাতেও হতে পারে।’
ওই চার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে আসছেন জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আছেন তারাই কেউ চার্জে থাকবেন। যার মিনিস্ট্রে একটা আছে তার মিনিস্ট্রি দুইটা হয়ে যাবে।’আসন্ন নির্বাচনে আবার প্রার্থী হবেন কি-না সেই প্রশ্নে মুহিত বলেন, ‘না না, আমি তো দাঁড়াব না, দ্যাটস মাই ডিসিশন। আমি নমিনেশন পেপার সাবমিট করব। ডামি কিছু সাবমিট করতে হয়। যদি আমার ক্যান্ডিডেট যে হবে সে মিস করে যায় তাহলে আমাকে দাঁড়াতে হবে… এ রকম ধরনের। ইট ইজ এ রুটিন ব্যাপার।’কেন নির্বাচনে দাঁড়াবেন না- সেই প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অবসর নিতে চাই, আমার মনে হয় আমার অবসর নেওয়া উচিত।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। এর পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করতে হবে সরকারকে।তবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা এখন সংবিধানে নেই। বর্তমান ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, তবে তিন মাসের ক্ষণ গণনা শুরু হলে সংসদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অধীনে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেন; যার নাম দেওয়া হয় ‘সর্বদলীয় সরকার’।
ওই মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর নেতাদের নেওয়া হয়। স্বল্প পরিসরের ওই মন্ত্রিসভা সরকারের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে।গত ২২ অক্টোবর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান মন্ত্রিসভায় ‘সব দলের’ প্রতিনিধিই আছেন। আর নির্বাচনকালীন সরকারের আকার ছোট করা হলে উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ফলে এবার নির্বাচন সামনে রেখে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করছেন না।