ঢাবিতে ৩ শিক্ষককে ‘লাঞ্ছিত করল’ ছাত্রলীগ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ’র তিন শিক্ষককে এক ছাত্রলীগ নেতা লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ওই শিক্ষকদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ল্যাবরেটরি স্কুলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের সময় এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও ঢাবি শিক্ষার্থীদের অধিভুক্ত কলেজ বাতিলের আন্দোলনে ছাত্রী লাঞ্ছনারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে গ্রাফিক্স নোবেল এবং ছোটদের মুজিব কোট ও কেক বিতরণ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় ল্যাবরেটরি স্কুলের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক শাহজীদা নাজনীন, মুমিনুল ইসলাম ও সাবিয়া আফরোজ সানী তাদের প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতারা সেলফি তুলতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মেয়েদের ওপর গিয়ে পড়ে। তখন ছাত্রলীগ নেতাদের নিরাপদ দূরুত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেন এ তিন শিক্ষক। এ সময় ছাত্রলীগের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান নিজেকে হল শাখার সভাপতি পরিচয় দেন। শিক্ষকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপরর্যায়ে এ ছাত্রলীগ নেতা দায়িত্বে থাকা তিন শিক্ষককে লাঞ্ছনা এবং কুরুচিপূর্ণ আচারণ করেন বলে জানা যায়।
স্কুলের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক শাহজীদা নাজনীন সোহানের অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর জন্মবার্ষীকি উপলক্ষে ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে বই বিতরণ করতে আসেন তিনি। এ সময় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন। বই বিতরণকালে এসব নেতাকর্মীরা সেলফি তুলতে গিয়ে মেয়েদের গায়ে গিয়ে পড়ে। তখন আমিসহ তিন শিক্ষক তাদের বাধা দেই। তখন সোহান এসে নিজেকে হলের সভাপতি পরিচয় দেয়। আমিও এক সময় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে দায়িত্বে ছিলাম বলেও তাকে জানাই। একপর্যায়ে সে আমাকে কুরুচিপূর্ণ আচারণ করে এবং লাঞ্ছনা করে। এ সময় আমার সহকর্মীরা কথা বলতে আসলে তাদের সাথেও খারাপ আচারণ করে। আমাদের দেখে নেবে বলে হুমকিও দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোহানুর রহমান সোহান বলেন, সেখানে সবাই সেলফি তুলছিল। আমি পেছনে ছিলাম। কিন্তু দেখি এই আপু চিল্লাচিল্লি করে। আমি তাকে বলি যে চিল্লাচিল্লি করেন কেন? তখন তিনি ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী ছিলেন বলে পরিচয় দেয়। আর আমার সাথে খারাপ আচারণ করেন। পরে আমি কোনো কথা না বলে সরে আসি।
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সূত্র: আমাদের সময়