সুন্দরবনে নানা অপকর্মে জড়িত বনবিভাগের কর্মচারীরা
মোংলা প্রতিনিধি : পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ফুয়েল জেটিতে থাকা `বাঘ রক্ষী-১’ নামে নিজস্ব লঞ্চ ও রেস্টহাউজে নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার ঘটনা ফাঁস হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ ব্যবসায় খোদ বনবিভাগের কর্মচারীরা জড়িত থাকায় ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বন বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা। কর্মচারীদের চাকরি বাঁচাতে দায়সারা তদন্ত করছেন বলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের এক বি এম (বোটম্যান) জানান, সম্প্রতি ‘বাঘ রক্ষী-১’ নামে বনবিভাগের নিজস্ব লঞ্চে লস্কর মো. চাঁন মিয়া চান্দু, বিভাগীয় বনকর্মকর্তার (ডিএফও) স্পিডবোট ড্রাইভার মনিরুজ্জামান বদি, ফুয়েল জেটি রেস্টহাউজের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন, আরেক বোটের ড্রাইভার আবু ইউসুফ তপু ও খুলনার পাইগাছা উপজেলার এক মেয়েকে স্থানীয় জনতা হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দেয়।
এদিকে ওই বোটম্যানেরই দেয়া খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনায় পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসানের নির্দেশে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) শাহীন কবির গতকাল সোমবার বিকেলে ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্ত করেন।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে শাহীন কবির বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবার বিভগীয় বনকর্মকর্তার কাছে দেয়া হবে। পরবর্তীতে তিনিই এর আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
তবে এ বিষয়ে চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম আপত্তিকর এ ঘটনার সংবাদটি প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।
তিনি বলেন, ‘লজ্জাজনক এ ঘটনার সঙ্গে বনবিভাগের সম্মান জড়িত, আমরা অফিসিয়ালি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে বদি, আনোয়ার, চান্দু ও তপু সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই মেয়েটি আমাদের বোন হয়। সে সুন্দরবন দেখতে খুলনা থেকে বেড়াতে এসেছে, এর বেশি কিছু নয়।’
এদিকে এর আগে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার (ডিএফও) স্পিডবোট ড্রাইভার মনিরুজ্জামান বদি ও আনোয়ারের ফুয়েল জেটির রেস্টহাউজের বাসভবন থেকে তিন যৌনকর্মীকে খদ্দেরসহ হাতেনাতে আটক করেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেস্টহাউজের পার্শ্ববর্তী মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ফরেস্টার (বনবিভাগ) বদি, আনোয়ার, সিরাজ, তপু ও চান্দু পার্শ্ববর্তী পশুর নদীর পাড়ের বানিশান্তা পতিতাপল্লীর যৌন কর্মীদের দিয়ে রেস্টহাউজ ও লঞ্চে দেহ ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন সময় বিষয়টি বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানালেও তাদের কোনোদিন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।
এদিকে ডিএফও মাহমুদল হাসানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং আমার এসিএফকে (শাহীন কবির) তদন্ত করতে বলেছি, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে আমি ব্যবস্থা নেব। আরটিভি অনলাইন