‘এমপিদের প্রচারণা স্থানীয় পর্যায়ে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি হবে’
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন। যেহেতু সংসদ সদস্য পদ লাভজনক নয়। তাই তাদের নাম অতি গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে পারবেন এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে তারা সরকারি সার্কিট হাউজ ব্যবহার করতে পারবেন না। এটি এখন ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা সংশোধন সংক্রান্ত বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এদিকে এ বিষয়ে সুজনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তে সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মূলত এমপিরা স্থানীয় পর্যায়ে অনেক ক্ষমতাবান হন। যদি এটি বাস্তবায়ন হয় তাহলে প্রতিপক্ষ প্রচারণার সুযোগ পাবে না। এতে স্থানীয় পর্যায়ে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এক কথায় বলা যায় প্রচারণার জন্য প্রার্থীদের সমতল পরিবেশ থাকবে না। প্রতিকের প্রতিকৃত ব্যতিত অন্য কিছু ব্যবহার করে প্রচারণা চালাতে পারবে না, ইসির এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আইনের সাথে জড়িত। আইনে কি বলা আছে, সেটা আগে দেখতে হবে। এ বিষয়ে এখনি সুস্পষ্ট বক্তব্য দিতে পারছি না।
আরও : ইস্ট লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে স্পিকার হলেন আয়াছ মিয়া
অন্যদিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেছেন, সিটি নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণার বিষয়টি আরো আগে সুরাহা হওয়ার দরকার ছিলো। তবে দেরিতে হলেও বিষয়টি কমিশন সভায় পাশ হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু এমপিরাও জনপ্রতিনিধি সেহেতু স্থানীয় নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহন দরকার আছে। জীবন্ত প্রতীক নিয়ে প্রচারণার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, জীবন্ত কোন কিছু নিয়ে প্রচারণা করলে ওই প্রাণীর অধিকার খর্ব করার সামিল হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মার্কা ছিলো বাঘ। তিনিও কিন্তু তার নির্বাচনী প্রচারণায় জীবন্ত বাঘ দিয়েই করেছিলেন। এতে দেখা গেছে ওই প্রাণীর অধিকার নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়েছিলো। তাই বর্তমান কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে আমি সাধুবাদ জানাই।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা প্রচারণা চালাতে পারবেন কি না জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, এটি সবেমাত্র কমিশন সভায় পাস হলো। এখন ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। সে হিসেবে গাজীপুরে এর সুযোগ খুবই কম। এছাড়াও বিদ্যমান সিটি করপোরেশন আচরণ বিধিমালায় ১১টি বিষয়ে সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতিকের প্রতিকৃত ব্যতিত অন্য কিছু ব্যবহার করে প্রচারণা চালাতে পারবে না। আর মেয়র প্রার্থীরা প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে নির্বাচনী ক্যাম্প করতে পারবেন। আগে এটা ছিল প্রতি থানায় একটি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন হাত পাখাওতো প্রতিক তাহলে সেটার আর কি প্রকৃতি হবে। এ প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আগে ছিল জীবন্ত কোন কিছু নিয়ে প্রচারণা করা যাবে না। যেমন হাতী, ঘোড়া ইত্যাদি এখন সেখানে বলা হয়েছে প্রকৃতি ব্যতিত অন্য কিছু নিয়ে প্রচারণা করা যাবে না। এর ফলে আর ক্ষেত থেকে তুলে ধানের ছড়া নিয়ে প্রচারণা করা যাবে না।