ভিলিয়ার্সে ব্যাটে কোহলিদের প্রথম জয়
স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ডি ভিলিয়ার্সের হাফসেঞ্চুরিতে তিন বল ও চার উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
ঘরের মাঠ এম. চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাঙ্গালুরু ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিতে মরিয়া বেঙ্গালুরুর বোলারদের সামনে সুবিধা করতে পারেনি পাঞ্জাবের ব্যাটসম্যানরা। ১৯.২ ওভারে ১৫৫ রানে অল আউট হয়ে যায় দলটি।
ব্যাট করতে নেমে ৩ ওভারেই ৩২ রান তুলে ফেলে পাঞ্জাব। তবে ইনিংসের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে পুরো দৃশ্যপটই পাল্টে দেন এবারের আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ভারতীয় পেসার উমেশ যাদব। সেই ওভারে ৪ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। চোখের পলকেই দলটির স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটের বিনিময়ে ৩৬ রানে। সেখান থেকে ৫৮ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন ওপেনার লোকেশ রাহুল ও করুন নায়ার।
আগের ম্যাচেই আইপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়া রাহুল আজ ঝড়টা ঠিক ওই মাত্রায় না তুললেও ভালোই ছুটছিলেন। কিন্তু ১২তম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরকে তুলে মারতে গিয়ে ৪৭ রানেই আউট হলেন। ৩০ বলের ইনিংসে ছিল ৪ ছক্কা ও ২ চার। দলের রান তখন ৯৪। ইনিংসের বাকি তখনো ৫৩ বল।
শেষ দিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ছাড়া আর কেউই ব্যাট হাতে ভরসা দিতে পারলেন না। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২১ বলে অধিনায়কের তোলা ৩৩ রানই হয়ে রইল দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। তাতেই স্কোরটা ১৫৫-র বেশি হলো না। ৪ বল বাকি থাকতে এবারের আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে অলআউট হলো পাঞ্জাব।
এদিন বেঙ্গালুরুর পক্ষে উমেশ যাদব ৩টি, ক্রিস ওকস, কুলবন্ত খেজরোলিয়া ও ওয়াশিংটন সুন্দর ২টি, যুজবেন্দ্র চাহাল ১টি উইকেট পেয়েছেন।
১৫৫ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফিরেছেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। কিন্তু তাতেও রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর খুব ক্ষতি হয়নি। কুইন্টন ডি কক ও বিরাট কোহলির মতো দুই স্ট্রোক মেকার জুটি বাধলে অমনটাই হওয়ার কথা। তবে বেঙ্গালুরু ধাক্কা খেল পঞ্চম ওভারে। ১৭ বছর বয়সী এক আফগানের গুগলিতে।
পাওয়ার প্লেতে বল করতে এসে আগের ওভারে মাত্র ২ রান দিয়েছেন। পরের ওভারের প্রথম ৪ বলেও মাত্র ১ রান। মুজিব-উর-রহমান এখানেই থামলেন না। ওভারের পঞ্চম বলটি অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে করলেন। এত বাইরের বল দেখে ড্রাইভ করার লোভ সামলাতে পারলেন না বিরাট কোহলি। দারুণ এক বাঁক নিল গুগলিটা। ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে স্টাম্পে চলে গেল বল, এতক্ষণ দারুণ ছন্দে থাকা কোহলিও বিদায় নিলেন মাত্র ২১ রানে।
৩৩ রানে ২ উইকেট হারানো বেঙ্গালুরু এরপরও ছুটছিল জয়ের দিকে। ডি কক ও এবি ডি ভিলিয়ার্স ঠান্ডা মাথায় এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। ১২তম ওভারে অশ্বিনের স্পিনে সেটা থামল। না অফ স্পিন বলা যাচ্ছে না। কারণ, অনেক আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে রাখা অশ্বিন আজ সত্যিকারেই লেগ স্পিন করেছেন! একটা স্লাইডারে বোল্ড হয়েছেন ডি কক। আর ঠিক পরের বলেই সত্যিকারের লেগ স্পিনে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন সরফরাজ খান। ৮৭ রানে ৪ উইকেট হারাল বেঙ্গালুরু।
ম্যাচের মোড়টা ঘুরল ১৭ ওভারে। ৪ ওভারে ৪১ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১০ রান দেওয়া মুজিব বল করতে এলেন। প্রথম ৪ বলে ৭ রান দিয়েছিলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় খারাপ কিছু নয়। কিন্তু শেষ দুটি বল একবার লং অফ আর মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা। মুহূর্তেই ১৮ বলে মাত্র ২২ রান লাগবে বেঙ্গালুরুর।
১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আবার ছক্কা ডি ভিলিয়ার্সের। ছক্কার হ্যাটট্রিকেই ৩৬ বলে ফিফটি ছুঁলেন ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান। কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ ফিরে গেলেন ডি ভিলিয়ার্স (৪০ বলে ৫৭, ২ চার ও ৪ ছক্কা)। এতক্ষণ ডি ভিলিয়ার্সকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া মনদ্বীপও (১৯ বলে ২২ রান) চতুর্থ বলে রান আউট হয়ে গেলেন! ম্যাচটা ক্ষণিকের জন্য জমে উঠল।
শেষ ওভারে ৫ রান লাগবে বেঙ্গালুরুর। হাতে ৪ উইকেট। কী হয়, কী হয়! প্রথম বলেই আপার কাট করলেন ওয়াশিংটন সুন্দর, থার্ডম্যান দিয়ে চার। পরের বল ডট। পরের বলে আর ঝামেলা বাড়ালেন না সুন্দর, কভার দিয়ে চার মেরে শেষ করলেন আনুষ্ঠানিকতা।
পাঞ্জাবের পক্ষে অশ্বিন ২টি ও প্যাটেল, মুজিব, টাই ১টি করে উইকেট লাভ করেন।