একমাত্র আ.লীগই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারবে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারবে না। একমাত্র আওয়ামী লীগই এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারবে।
বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর অধিবেশন সমাপ্তি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করার মধ্য দিয়ে অধিবেশনের ইতি টানেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। পাঁচ দিনের এই অধিবেশনে পাঁচটি বিল পাস হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, এই বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনে জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করে, তিনি আবার দেশসেবার সুযোগ পান, তাহলে বাংলাদেশ আগামী ছয় বছরে উন্নয়নশীল তো হবেই; উন্নত দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। বর্তমান সরকার এমন পর্যায়ে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার শর্ত পূরণ করেছে যে অন্য কেউ ক্ষমতায় এলেও যদি তারা অর্জনগুলো ধ্বংস করতে না চায়, তাহলে দেশ উন্নয়নশীল হবে।
সংসদ নেতা বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ যে উন্নয়ন করেছিল, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেসব উন্নয়ন ধ্বংস করে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিল। বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে খাদ্যঘাটতিতে নিয়ে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে কমিয়ে আনে। সাক্ষরতার হার নেমে যায়।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রস্তাব পাসের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই। আমি মনে করি, এটি আমার দায়িত্ব–কর্তব্য। আমি ধন্যবাদ জানাই দেশের জনগণকে, যারা আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। সরকার গঠন করার সুযোগ দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অনেক শর্ত নিয়ে ঋণ পেতে হতো। এখন ঋণ প্রাপ্তি সহজ হবে, শর্তের বেড়াজালে পড়তে হবে না। এখন একটা মর্যাদা থাকবে।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ইচ্ছা থাকলেও কেউ বেকার থাকতে পারবে না। কারণ আমরা ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছি।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই সরকার গঠন করেছি, জনগণের সেবক মনে করেছি। নিজে কী পেলাম, না পেলাম, কখনো সে হিসাব আমি করিনি, করিও না।’
বিরোধীদলীয় নেতা যা বললেন
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ব্যাংক খাত ও শিক্ষা খাত দিন দিন নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারছেন না। কেন পারছেন না কে জানে। তবে এবার তা হচ্ছে না, এখন থেকে ফাঁস বন্ধের দিকে যাচ্ছে। রাজনৈতিক করণে ব্যাংকঋণ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংক খাতে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। এই দুটি খাতের সংস্কার জরুরি।
দশম সংসদের ২০তম এই অধিবেশনে পাঁচটি বিল পাস হয়। কার্যপ্রণালি বিধির ৭১ বিধিতে ১৩০টি নোটিশ পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৬টি গৃহীত এবং গৃহীত নোটিশের মধ্যে ৪টি সংসদে আলোচিত হয়। ৭১ (ক) বিধিতে ৫৮টি নোটিশ আলোচনা হয়।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য ৬৩টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৩টি প্রশ্নের উত্তর দেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। অন্য মন্ত্রীরা ১ হাজার ১৬৪টি প্রশ্নের মধ্যে ৩৮৭টির জবাব দেওয়া হয়।