জয়ের পথে পুতিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রবিবার রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্ব। বুথ ফেরত সমীক্ষায় এবারও পুতিনের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে জনসমর্থনের পাল্লা। তাঁর প্রতি জনসমর্থনের হার প্রায় ৭০% যা তাঁর নিকটতম প্রতিপক্ষের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। এবারে জিতলে প্রায় ২৫ বছর ক্ষমতার শীর্ষে থাকবেন পুতিন। শীর্ষতম শাসক পদের মেয়াদের ভিত্তিতে তাঁর চেয়ে এগিয়ে একমাত্র জোসেফ স্তালিন।
ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবারও সহজ জয়ের পথে ভ্লাদিমির পুতিন। তবে বিরোধীদের দাবি, ভোটের হার বেশি দেখাতে জোর করে ভোটারদের বুথে ঢোকানো হয়েছে।
বিশ্বের চোখে রাশিয়ার ভাবমূর্তি ও স্বার্থ রক্ষায় পঁয়ষট্টি বছর বয়সী এই প্রাক্তন ‘কেজিবি-র চর’কেই যাবতীয় কৃতিত্ব দিয়ে থাকেন রাশিয়ার বেশিরভাগ নাগরিক। ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলে আগ্রাসন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নাক গলানো বা সিরিয়ায় রাশিয়ার লাগাতার বোমা বর্ষণ নিয়ে বিশ্বে যতই নিন্দার ঝড় বয়ে যাক না কেন, এই সমস্ত কারণেই শক্তিশালী দেশনেতা হিসেবে পুতিনের ভাবমূর্তি সম্প্রতি উজ্জ্বলতর হয়েছে। এমনকি ব্রিটেনে এক রুশ চরকে বিষপ্রয়োগে হত্যার অভিযোগও পুতিনের জনপ্রিয়তায় থাবা বসাতে ব্যর্থ।
দক্ষিণ রাশিয়ার উস্ত-জেগুটা অঞ্চলের এক শিক্ষক ল্যুবোভ কাচান যেমন হেঁকেডেকেই বলেছেন, ‘আমি পুতিনকে ভোট দিয়েছি। আমাদের দুর্দশার জন্য দায়ী বিশ্বের বেশ কিছু দেশ, যাদের নিরন্তর নেতিবাচক প্রচারের বিরুদ্ধে লড়ে মাথা উঁচু করার সংগ্রাম তিনি জিইয়ে রেখেছেন।’
নির্বাচনী প্রচারে পুতিনের সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার কারণ ছিল ভোটবুথে ক্ষয়িষ্ণু হাজিরার হার। এমনকি নিজের সমর্থকদেরও বুথে হাজির করতে হিমশিম খেয়েছেন প্রেসিডেন্টের পার্ষদ ও কর্মীরা। আসলে একপেশে নির্বাচনী লড়াইয়ের ফল সকলেই প্রায় আন্দাজ করে নেওয়ার ফলে বুথে সশরীরে হাজিরা দেওয়ায় অনেকের অনীহা দেখা দিয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, পুতিন সমর্থক বেশ কিছু সংস্থার মালিকরা কর্মীদের ভোট দিতে যাওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন এবং ভোট দেওয়ার প্রমাণ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, দলে দলে নাগরিক ভোট দিতে চলেছেন এবং ভোট দেওয়ার পরে বুথের সামনে দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলছেন। এ সব সত্ত্বেও দুপুর ১২-৩৫ (জিএমটি) নাগাদ ভোটদানের হার ছিল মাত্র ৩৪.৭০%।
উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ সরকারি নির্বাচন সমীক্ষা সংস্থা ভিটিএসআইওএম জানায়, ৬৯% ভোট পড়তে চলেছে পুতিনের পক্ষে। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কম্যুনিস্ট পার্টির প্রার্থী পাভেন গ্রুডিনিনের পক্ষে পড়ে মাত্র ৭% ভোট। সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট, টাইম