গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকাশ হোক বা না হোক কোনো অবস্থাতেই গর্ভ নষ্ট করা বৈধ নয়। চাই তা ডিএনসি কিংবা কোনো ওষুধের মাধ্যমে গর্ভপাত করা হোক। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে গেলে এবং রূহ সঞ্চার হওয়ার পর হলে তা নষ্ট করাতো আরো বড় কবিরা গুনাহ এবং মানুষ হত্যার শামিল।
তবে বিশেষজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী কখনো কখনো গর্ভপাত বৈধ। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো : গর্ভস্থিত সন্তানের বয়স হিসাবে তাকে চার ভাগে ভাগ করা যায় :
ক) গর্ভস্থিত সন্তানের বয়স ছয় মাসের বেশি হলে কোন অবস্থাতেই সন্তান নষ্ট করা বৈধ নয়। সম্পূর্ণ হারাম। এবং এটি মানুষ হত্যার নামান্তর। কারণ এ অবস্থায় তাকে সিজারের মাধ্যমে বের করা হলে ডাক্তারদের রিপোর্ট অনুযায়ী বাচ্ছা শঙ্কাহীনভাবে জীবিতই থাকে।
খ) গর্ভস্থিত সন্তানের বয়স ছয় মাসের কম হলে এবং চার মাস তথা একশো বিশদিনের বেশি হলে সন্তানের দেহে প্রাণ সঞ্চার হয়। তাই এ অবস্থায়ও গর্ভপাত করানো সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। এবং এটিও মানুষ হত্যার শামিল। তবে সিজারের মধ্যমে তাকে বের করে আনা হলে ডাক্তারদের বক্তব্যানুযায়ী বাচ্চা জীবিত থাকবেনা। তাই বিশেষজ্ঞ নির্ভরযোগ্য ডাক্তারের বিপোর্ট অনুযায়ী কখনো মায়ের মৃত্যুর আশঙ্কা হলে বা শারীরিক মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিলে তখন গর্ভ নষ্ট করা নাজায়েয নয়।
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র তালাক হয়ে যাওয়ার কারণে গর্ভ নষ্ট করা বৈধ হয়ে যায় না। এইছাড়া গর্ভপাত করার কারণ যদি হয় সন্তান লালন-পালন করার কষ্ট অথবা তাদের ভরণ-পোষণ করার দুশ্চিন্তা অথবা ভবিষ্যৎ গড়ার চিন্তা অথবা যে সন্তান আছে তাদেরকে যথেষ্ট মনে করা, তাহলেও বৈধ নয়।
গ) ভ্রæণের বয়স ৪২ দিন পর হয়ে গেলে ডাক্তারদের রিপোর্ট অনুযায়ী বাচ্ছার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকাশ পায়্। তাই ফোকাহায়ে কেরাম বলেন, ৪২ দিন থেকে ১২০ দিনের পূর্ব ভ্রণ নষ্ট করা মাকরুহে তাহরীমি। এবং কবিরা গুনাহ। অবশ্য শরীয়ত সমর্থিত কোন ওযর দেখা দিলে তখন গর্ভপাত করানো অবৈধ নয়। যেমন, বিশেষজ্ঞ নির্ভরযোগ্য ডাক্তারের বিপোর্ট অনুযায়ী মায়ের মৃত্যুর আশঙ্কা হলে বা শারীরিক মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিলে, কিংবা গর্ভপাত না করলে মায়ের দুধ শুকিয়ে পূর্বের দুগ্ধপোষ্য সন্তানের শারীরিক মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেয়া ইত্যাদি।
ঘ) ভ্রণের বয়স ৪২ দিনের পূর্বে ডাক্তারদের রিপোর্ট অনুযায়ী বাচ্চার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রকাশ পায়্ না। তবুও ফোকাহায়ে কেরামের বক্তব্যানুযায়ী ৪২ দিনের আগে গর্ভপাত করানো অনুত্তম বা মাকরূহে তানযীহি। এর থেকে যথাসাধ্য বিরত থাকা চাই। তবে কোনো ওযর থাকলে বৈধ। সংগৃহিত : তাওহীদ নুজাইম