সুযোগ পেলে জনগণ বিএনপিকে বাংলাওয়াস করবে
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, বোমা হামালা, গ্রেনেড হামলা, জঙ্গি, বাংলা ভাইদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী বিএনপিকে জনগণ সুযোগ পেলে ‘বাংলাওয়াস’ করবে।
গত ৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে হুইপ মো. শাহাব উদ্দিন সমর্থন করেন।
গত ৭ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম ও বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে এ ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ ২২তম দিনে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সরকারি দলের তানভীর ইমাম, সোহরাব উদ্দিন, মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, আব্দুল মজিদ খান, আবদুর রহমান বদি, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, জাতীয় পার্টির এ কে এম মাঈদুল ইসলাম ও জাসদের নাজমুল হক প্রধান আলোচনায় অংশ নেন।
মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, ভিশন-২০২১ সামনে রেখে দেশের শতকরা ৮৫ ভাগ মানুষের জন্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে গত দশ বছরে মাছ, দুধ ও ডিমের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। মাংসের ক্ষেত্রে তা সাতগুণ। ভিশন ২০২১ লক্ষ্যমাত্রায় দৈনিক ২৫০ মিলি. দুধ, ১২০ গ্রাম মাংস এবং সপ্তাহে ২টি ডিম হিসেবে বার্ষিক চাহিদা মেটাতে সরকার কাজ করছে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার মাছের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি বিলুপ্ত প্রায় মাছের জাত রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত ৪১ দশমিক ৩৪ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। দৈনিক ৬০ গ্রাম হারে মাছ খাওয়ার লক্ষ্যমাত্রায় চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৫০ লাখ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ চলতি বছরের জুলাই মাসেই মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের মাংস ও দুধের চাহিদা পূরণে উন্নত জাতের পশু পালন ও দুগ্ধজাত পশু পালনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গত দশ বছরে মাংসের উৎপাদন সাতগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরে দেশে মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৪ দশমিক ৫ লাখ টন। একই সময়ে দুধের উৎপাদন বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুধ উৎপাদন হয়েছে ৯২ লাখ ৮৩ হাজার টন। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে দুধ উৎপাদন হয়েছিল ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন।
মন্ত্রী মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে তা দূরীকরণে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অন্য সদস্যরা বলেন, গঠনতন্ত্রের ধারা সংশোধন করে খালেদা জিয়া নিজেকে দুর্নীতিবাজ বলে প্রমাণ দিয়েছেন। এই দুর্নীতিবাজদের কোন ধরনের অরাজকতা বরদাস্ত করা হবে না।
তারা বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে ছেলেদের নিয়ে ভাগাভাগি করেছে। তার দুই ছেলে তারেক-কোকো আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। এরা দুর্নীতি করে দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে।
তারা বলেন, বিএনপি দেশে বোমা হামালা, গ্রেনেড হামলা, জঙ্গি, বাংলা ভাইদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। দেশের জনগণ সুযোগ পেলে এদের ‘বাংলাওয়াস’ করে দেবে।
সংসদ সদস্যরা বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ আবোরো শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করবে।
জাসদের সদস্য নাজমুল হক প্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দেশের মানুষের উপর বিশ্বাস ও আস্থা না থাকায় তারা দেশে জ্বলাও-পোড়াও করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ক্ষমতায় আসার জন্য জনগণের উপর নির্ভর না করে ভিন্ন রাস্তা খুঁজছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অব্যাহত রাখতে তিনি আগামীতেও এই সরকারকে নির্বাচিত করতে দেশের মানুষের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের কথা বলে বিএনপি-জামায়াত সরকারের উপর দোষ চাপাতে চাইছে। কিন্তু বিএনপি আমলে সরকার ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার একবারের জন্যও দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়নি।