শনিবার, ২৭শে জানুয়ারি, ২০১৮ ইং ১৪ই মাঘ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে মাটিতে নামিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ২৫, ২০১৮
news-image

উইকেট নয় খুব বেশি বোলিং বান্ধব। শ্রীলঙ্কান বোলাররাও করেননি আহামরি বিধ্বংসী বোলিং। স্কোরকার্ড তবু যেন মধ্য দুপুরের মায়াবী বিভ্রম। ৮২ রানে অলআউট বাংলাদেশ, ১০ উইকেটে হার। দিন-রাতের ম্যাচ যখন শেষ, শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তখনও চকচকে রোদ। কিন্তু বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম ডুবে অন্ধকারে।

ত্রিদেশীয় সিরিজে উড়তে থাকা বাংলাদেশকে বৃহস্পতিবার মাটিতে নামিয়ে ফাইনালে উঠল শ্রীলঙ্কা। ১০০ ওভারের ম্যাচ শেষ ৩৫.৫ ওভারেই। ২৪ ওভারে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ৮২ রানে। শ্রীলঙ্কা জিতেছে ১১.৫ ওভারেই।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ইনিংস। ২০০২ সালে করা ৭৬ রান সর্বনিম্ন। এর চেয়ে কম ওভারে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে তিনবার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ উইকেটের হার এই নিয়ে দ্বিতীয়বার।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ছিল যেন দুঃস্বপ্নের প্রতিশব্দ। তামিম ইকবাল ছাড়া ভালো বলে আউট হননি কেউ। সাকিব আল হাসান হয়েছেন রান আউট। বাকি সবাই উপহার দিয়ে এসেছেন উইকেট। বলা যায় দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের আদর্শ নমুনা।

শূন্য রানে বাজে শটে এনামুল হকের বিদায়ে শুরু। পঞ্চম ওভারে দুই বলের মধ্যে তামিম ও সাকিব বিদায় নেন দানুশকা গুনাথিলাকার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে।

দারুণ দুটি চার দিয়ে শুরু করা সাকিবকে ফেরান দুর্দান্ত সরাসরি থ্রোতে। কুসল পেরেরার চোটে একাদশে ফেরা গুনাথিলাকা এরপর তামিমকে ফেরান চোখধাঁধানো ক্যাচে। সুরঙ্গা লাকমলের দারুণ বাউন্সার চমকে দিয়েছিল তামিমকে। ব্যাটে ছোবল দেওয়া বল পয়েন্ট থেকে ডানে ছুটে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন গুনাথিলাকা।

দলের রান তখন ৩ উইকেটে ১৬। মিডল অর্ডারের জন্য সুযোগ করে দেখানোর। সাব্বির-নাসিরদের সামনে সুযোগ নিজেদের প্রমাণের। হলো না কিছুই। একের পর এক উইকেট উপহার দিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় মাতলেন সবাই।

বাংলাদেশকে শর্ট বলে কাবু করার পরিকল্পনা নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন শর্ট বল ক্যাচ দিয়েই। দলের যখন চাই জুটি, সাব্বির রহমান আউট হলেন বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে।

সাতে সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে ব্যর্থ আবুল হাসান। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের যে বলে আউট হলেন নাসির হোসেন, সেটিতে ইচ্ছে করেও আউট হওয়া কঠিন। টুর্নামেন্টের তিন ম্যাচে নাসিরের রান ৫। আউটের ধরন একটির চেয়ে আরেকটি হতাশাজনক।

শেষ ভরসা হয়ে থাকা মুশফিকও ফিরলেন স্লগ করে উইকেট বিলিয়ে। এদিন আর দলের জন্য কিছু করতে পারেনি লোয়ার অর্ডারও। তাই ৮২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার বিব্রতকর স্বাদ।

শ্রীলঙ্কার চার বোলার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন উইকেট। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা বঞ্চিত করেনি কাউকেই।

বোলারদের পথ ধরে হতাশার জাল ছিঁড়ে বের হলেন এদিন লঙ্কান ওপেনাররাও। ফর্ম পেতে লড়তে থাকা উপুল থারাঙ্গা পেলেন রানের দেখা। টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা গুনাথিলাকাও সাবলীল। তাই ১০ উইকেটের জয়।

প্রথম তিন ম্যাচেই বোনাস পয়েন্টসহ জয়ে উড়ন্ত বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচ বাস্তবতার চপেটাঘাত। অনেকের জন্য ম্যাচটি আত্মজিজ্ঞাসারও। ফাইনাল জিততে প্রয়োজন সেই প্রশ্নগুলির উত্তর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৪ ওভারে ৮২ (তামিম ৫, এনামুল ০, সাকিব ৮, মুশফিক ২৬, মাহমুদউল্লাহ ৭, সাব্বির ১০, আবুল হাসান ৭, নাসির ৩, মাশরাফি ১, রুবেল ০, মুস্তাফিজ ১*; লাকমল ৩/২১, চামিরা ২/৬, থিসারা ২/২৭, সান্দাকান ২/২৪)।

শ্রীলঙ্কা: ১১.৫ ওভারে ৮৩/০ (গুনাথিলাকা ৩৫*, থারাঙ্গা ৩৯*; মাশরাফি ০/১৫, আবুল হাসান ০/২৫, নাসির ০/১৯, মুস্তাফিজ ০/১৪, সাকিব ০/১০)।

ফল: শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সুরাঙ্গা লাকমল