সু চির আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে সঙ্গ ছাড়লেন মার্কিন কূটনীতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার সঙ্গ ছেড়েছেন খ্যাতিমান মার্কিন কূটনীতিক বিল রিচার্ডসন।
সু চিকে পরামর্শ দেয়ার জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য ছিলেন এ কূটনীতিক।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এই প্যানেলের ভূমিকা ও সু চির ‘সদিচ্ছা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিচার্ডসন। তিনি একে ‘লোক দেখানো’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মিয়ানমার সরকার রিচার্ডসনকে এ প্যানেলে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি।
তিনি অং সান সু চির ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।
একসময় ক্লিনটন প্রশাসনে কাজ করা এই অভিজ্ঞ কূটনীতিক বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে সু চির ‘নেতৃত্বে নৈতিকতার ঘাটতি’ রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রিচার্ডসন বলেন, সোমবার এক বৈঠক চলার সময় সু চির সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছে।
সোমবারের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে মিয়ানমারে আটক হওয়া রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রিচার্ডসন।
এ প্রসঙ্গের অবতারণা করতেই সু চি ‘ক্ষিপ্ত’ হয়ে যান এবং এ বিষয়ে কথা বলা ‘উপদেষ্টা প্যানেলের কাজ নয়’ বলেও তিনি সাফ জানিয়ে দেন।
এ ছাড়া এই প্যানেল নামে মাত্র থাকলেও কাজের কাজ কিছু না করে মূলত সে দেশের সরকারকে তুষ্ট রাখা বা মনোরঞ্জন করাই মূল উদ্দেশ্য বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
তার ভাষায় সরকারের জন্য ‘চিয়ার-লিডিং স্কোয়াড’ হিসেবে কাজ করবেন না বলেই তিনি পদত্যাগ করেছেন।
অং সান সু চি উদ্যোগে গত বছর এ আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড গঠন করেছিল মিয়ানমার সরকার।
এর উদ্দেশ্য ছিল রাখাইন রাজ্যের স্থিতিশীলতার জন্য সুপারিশ বাস্তবায়ন করা।
১০ সদস্যবিশিষ্ট এ উপদেষ্টা বোর্ডের পাঁচজন বিদেশি সদস্য।
রিচার্ডসনের পদত্যাগের পর এখনও মিয়ানমার সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমারে যে নৃশংসতা চলছে, সেটিকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধনের একটি ধ্রুপদী উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।