‘খালেদা জিয়া পথের মধ্যে নাটক করেছেন’
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ কিংবা সমবেদনা জানাতে যাননি। রোহিঙ্গাদের অবলম্বণ করে নির্বাচনী প্রচারণা করতে গিয়েছেন। শো-ডাউন করে লোক দেখাতে গিয়েছেন। আাগমী নির্বাচন’ই বলে দেবে কার কত লোক আছে। তিনি মূলত পথে মধ্যে নাটক করেছেন, হামলার নাটক সাজিয়েছে’। সাম্যবাদী দলের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জঙ্গি ও দেশ বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজতন্ত্রীক রাষ্ট্র কায়েমের অঙ্গিকার করেছে বাম রাজনৈতিক দলের নেতারা।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটউশন মিলনায়তনে দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল (জাসদের) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, কমউনিষ্ট কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম, জাসদের এক অংশের সভাপতি শরিফ নূরুল আম্বিয়াসহ বাম রাজনৈতিক দলের নেতারা।
মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা তাদেরই সাজানো নাটক। ওই নাটকের তদন্ত চলছে, অল্প সময়ের মধ্যেই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।
অনুষ্ঠানে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “সমাজতন্ত্র কায়েমের লক্ষে এই উপমহাদেশে দীর্ঘ দিন আগে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় সাম্যবাদী দলের যাত্রা। লেনিনের মতাদর্শে এ দেশে মানুষ জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ে অনুপ্রনিত হয়েছিল।
“বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লিখা সংবিধানের চারটি মূলনীতির একটি হলো সমাজতন্ত্র। যা আমরা নিজেরা লিখে তা আজ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। নিজেরা লিখে তা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি নাই।সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে সামনে আরো কঠিন সময় আসবে।”
সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে দিলে সামনে বিপদ আছে দাবি করে মেনন বলেন “বাংলাদেশে ৩ কোটি মানুষ এখনও দরিদ্র। অনেক মানুষ হতদরিদ্র। শুধু উন্নয়ন নয়, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ, জামায়াত-শিবিরকে উৎখাত করতে না পারলে, তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হতে না পারলে সামনে আরও কঠিন সময় আসবে।”
“২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় দেশ এবং ২০৪১ সালে আধুনিক একটি দেশ হবে বাংলাদেশ। কিন্তু আমি বলতে চাই, এসব উন্নয়ন কার জন্য? মেনন বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ফাঁসি দিতে পেরেছি এমন ভেবে যদি ভাবি যুদ্ধে জয়ী হয়ে গেছি তা ভূল হবে। যুদ্ধাপরাধী, জামায়াত-শিবির, তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়কারী বিএনপি সন্ত্রাসীদের নির্মল করতে হবে। তারা, তাদের রাজনৈতিক দল যদি কোনো অবস্থায় ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে ৩০ লাখ মানুষ হত্যার শিকার হবে। দেশে প্রগতিশীল মুক্তমনা মানুষদের খুন করা হবে।
সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে জাসদেরিএকাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হচ্ছে সমাজতন্ত্র। আমরা সমাজতন্ত্রের পক্ষে। সমাজতন্ত্রের বিপক্ষে শাসক ও শোষণকারীরা। সমাজতন্ত্র ছাড়া জীবন চলে না। সংবিধানে ৪ নীতির মধ্যে সমাজতন্ত্র একটি। ৭৫ এর পর সংবিধান থেকে সমাজতন্ত্র নীতিটি কেটে ফেলা হয়।
“এখন সংবিধানে সমাজতন্ত্রসহ ৪ নীতি রয়েছে। আমি বলব, প্রধানমন্ত্রী আপনি সংবিধানের পাতা থেকে সমাজতন্ত্রকে জীবনের পাতায় আনেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ৪ নীতির মধ্যে সমাজতন্ত্রী নীতিটি অন্যতম’’। তিনি বলেন, দেশ থেকে যে করেই হোক তেতুল হুজুর, জঙ্গি-সন্ত্রাসী, জামায়াত ও তাদের পোষণকারীদের চিরতরে উচ্ছেদ করতে হবে।”
বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) এর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, “রাজনৈতিক আলোচনা করতে গেলে সমাজতন্ত্র দলগুলোকে ডাকতে হবে। এখন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। মার্কা ছাড়া অনেক বড় বড় দল নির্বাচনে হারবে। আমরা ১৪ দলের সঙ্গে আছি, থাকবো।”
“তিনি যদি রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগীতা করতে যেতেন তাহলে বিমানেই যেতে পারতেন। প্রায় তিন মাস পর সেজে ঘোজে কোটি টাকা খরচ করে, সারি সারি গাড়ি নিয়ে যেতেন না। পেট্রোল খরচ আর সাজ ঘোজে যে টাকা খরচ করা হয়েছে সেই টাকা দিয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহযোগীতা করতে পারতেন। “ওখানে গিয়ে তিনি মিথ্যাচার করে বলেছেন, সরকার ও আওয়ামী লীগ রোহিঙ্গাদের জন্য কিছুই করেননি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এতবড় মিথ্যাচার কী করে করতে পারে। এ মিথ্যাচারের জবাব দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে দেবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারও জয়ী করবে দেশের মানুষ।”