এবার আসা যাক প্লে-অফ ম্যাচ প্রসঙ্গে। প্লে-অফ ম্যাচে সিরিয়ার প্রতিদ্বদ্বী তুলনামূলক শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া। অবিশ্বাস্য ব্যপার হলো- প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে ফেলেছে সিরিয়া। এখানেও সেই একই ইতিহাসের পূনরাবৃত্তি। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ও যখন শেষের পথে তখন পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে নেন আগের ম্যাচের নায়ক ওমর আল সোমা। খেলার ফলাফল ২-২ গোলে হয় ড্র। তাই সিডনিতে সমানে সমানে দ্বিতীয় প্লে-অফ ম্যাচ খেলবে এ দুটি দল।
দ্বিতীয় প্লে-অফ ম্যাচে উৎরে গেলে ইতিহাস সৃষ্টি করবে সিরিয়া। কারণ সিরিয়ার বর্তমান দলটি অসংখ্য ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখ্যিন হয়েছে। দেশটির শতাধিক পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় আসাদ সরকারের বিরোধীতা করে নিখোঁজ কিংবা গুম হয়ে গেছে। বেশিরভাগই সিরিয়ার কুখ্যাত কারাগারগুলোতে বন্দী অবস্থায় ছিলো। ২০১৪ সালে সাদনায়া কারাগারের প্রকাশিত কয়েকটি ছবি প্রকাশিত হলে অন্তত তিন জন খেলোয়াড়ের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে। ছবিতে তাদেরকে ছিন্নভিন্ন এবং দুর্ভিক্ষ পীড়িত মনে হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সিরিয়ার জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জিহাদ কাসাবও ছিলেন। আল-ইতিহাদ ফুটবল ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড় জাকারিয়া ইউসেফ সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর বোমার আঘাতে প্রাণ হারান। সিরিয়ার বর্তমান দলটির বেশিরভাগই শরণার্থী বেশে দেশ ছেড়েছেন। বাছাইপর্বের জন্য তাই সিরিয়ান ফুটবল দল মালয়শিয়াকেই নিজেদের ‘হোম ভেন্যু’ হিসেবে ব্যবহার করছে। গ্রপের শক্তিশালী দল ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তানের সঙ্গে সমানে সমান পাল্লা দিয়ে পুরো সময়টাই জানান দিয়েছে, তারা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে।
এশিয়া থেকে চারটি দল বাছাই পর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপে যাবে। পঞ্চম দলটিকে প্লে-অফ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপে যেতে হবে। ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও সৌদি আরবের বিশ্বকাপ ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। এদিকে সিরিয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্লে-অফ ম্যাচের প্রথম পর্বে ড্র করে ফেলায় পুরো দলটির আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। যেভাবেই হোক অস্ট্রেলিয়াকে তারা হারিয়ে ইতিহাস রচনা করতে চায়। এমনটি চাইছে সিরিয়ার সাধারণ মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল সব মানুষই।
দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট অবলম্বণে