পদত্যাগ করেছিলেন হাতুরুসিংহে!
---
স্পোর্টস ডেস্ক :বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছিলেন। যদিও এক বছর আগের সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বছর ঘুরতেই সেই তথ্য বের হয়ে এলো দেশের শীর্ষ দৈনিক কালের কন্ঠের প্রতিবেদনে।
গেল বছরের আট আগস্ট বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনের কাছে পাঠানো আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ পত্রে শ্রীলঙ্কান কোচ হাতুরুসিংহে লেখেন, ‘হেড কোচ হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনকালে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে। যা ভূমিকা রেখেছিলো আমার নিজের সেরাটা দেওয়ার ক্ষেত্রে। একই সঙ্গে যা খেলোয়াড়দের জন্য নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া পারফরম্যান্সের পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছিলো।’
যদিও আগেই ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেছে চান্দিকার। সেই চুক্তির ফাঁকও আছে। চাইলেই বিসিবি কিংবা হাতুরুসিংহে তিন মাসের নোটিশ দিয়ে চুক্তি থেকে বের হয়ে যেতে পারবে। পদত্যাগপত্র দিয়ে হয়তো সেই সুযোগটাই নিয়েছিলেন লঙ্কান কোচ। যদিও, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছিলন তিনি। লিখেছিলেন, ‘ব্যক্তিগত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে নিজ সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে আমি অপারগ। অনেক চিন্তাভাবনার পর তাই বিসিবির প্রধান কোচের পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা কার্যকর হবে ৮ নভেম্বর ২০১৬ থেকে।’
ওই ঘটনার পরপরই হাতুরুসিংহের সঙ্গে বিসিবির একাধিক কর্মকর্তা বসে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। সেটা না হলে গেল অক্টোবরে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুশফিকুর রহিমদের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পরপরই এই শ্রীলঙ্কান কোচের বাংলাদেশ অধ্যায় শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কর্মকর্তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে হাতুরুসিংহে নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন। তার আট আগস্টের পতত্যাগপত্রের বিপরীতে ২৫ আগস্ট তাকে চিঠি দেন প্রধান নির্বাহী। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, ২০১৯ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ পর্যন্ত জাতীয় দলসংক্রান্ত কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা আপনার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি। এ অবস্থায় আপনার অনুপস্থিতি কিংবা দায়িত্ব পালনে অপারগতা আমাদের ব্যাপকভাবে লক্ষ্যচ্যুত করবে এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও খেলোয়াড়দের উন্নয়নকেও ব্যাহত করবে। এসব বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বার্থেই বোর্ড আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে পারছে না। ’
শেষ পর্যন্ত জানা যায়, ড্রেসিংরুম কিংবা বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে কিছু নয়, মূলত ওই সময়ে প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো তার পছন্দ হয়নি। সে কারণেই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তার আগেই অবশ্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) আমন্ত্রণ জানিয়েছে কোচ হওয়ার। সেই সুযোগটাই নিয়েছিলেন হাতুরুসিংহে। যদিও বিসিবি পরবর্তীতে মাসে প্রায় ২৮ হাজার ইউএস ডলার বেতন ধার্য করে নতুন চুক্তিতে তাকে রাজি করায়। শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব ছাড়া গ্রাহাম ফোর্ডের বেতনও এর কাছাকাছিই ছিলো।