বাংলাদেশের হারের কারণ উঠে আসলো বিশ্ব গণমাধ্যমে
---
স্পোর্টস ডেস্ক :ক্রিকেটের অন্যতম সেরা আসর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। ৩০৫ রানের বড় ইনিংস খেলার পর কেন হারলো বাংলাদেশ?
বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শাকিল আনোয়ার রয়েছেন ওভালে। খেলা দেখে তিনি বলছেন, এর বেশ কিছু কারণ রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। শাকিল আনোয়ার বলছেন “প্রতিপক্ষ যেখানে ইংল্যান্ড সেখানে ৩০৫ রানের ইনিংস নি:সন্দেহে বড় ব্যাপার। তবে ওভালের পিচ ব্যাটিং সহায়ক পিচ। ফলে ৩০৫ রানটা যথেষ্ট হয়নি। এছাড়া তামিম এবং মুশফিক অসামান্য খেলেছেন কিন্তু অন্য যারা ছিলো তারা যথেষ্ট সহযোগিতা তাদেরকে করতে পারেননি। প্রতিপক্ষ যেখানে ইংল্যান্ড সেখানে রানটা আরো বেশি হতে পারতো । ৩৩০/৩৪০ করতে হতো”।
এই হারের যুক্তি কী দেখাচ্ছে দল?
খেলার পরে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বিন মুর্তজা এক প্রকার মেনেই নিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে তাদের ২৫/৩০ রান কম ছিলো। আর বোলিং এর বিষয়ে তিনি বলেছেন মাঝের ওভার গুলোতে আরো ভাল বল করা উচিত ছিল সেটা আমরা পারিনি।
ইংল্যান্ডের রয়েছে অনেক ভালো ব্যাটসম্যান, এছাড়া তারা নিজেদের মাটিতে খেলছে সেটা একটা বড় দিক। এছাড়া দল হিসেবেও তারা বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী।
শাকিল আনোয়ার বলছেন ” এছাড়া বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানদের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বেশি। অন্যতম স্পিনার মিরাজ ছিলেন না দলে অর্থাৎ দল নির্বাচনে বড় ঘাটতি ছিলো বলে মনে করছেন তিনি”।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলের পক্ষে তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম জুটির ১৬৬ রান দলের জন্য বড় ভিত গড়ে দেয়। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রান এটা। কিন্তু ৩০৫ রান তাড়া করে কিভাবে জিতেছে ইংল্যান্ড?
পরে ১৬ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে জিতে যায় ইংল্যান্ড। যা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড। ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস ৮৬ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ৯৫ রানের ইনিংসই বাংলাদেশের ৩০৫ রানকে তাড়া করতে অনেক সাহায্য করে।
ম্যাচ শুরুর এক দিন আগে ক্রিকেট বিশ্লেষক বোরিয়া মজুমদার ইংল্যান্ড আর বাংলাদেশের মধ্যে কালকের প্রতিযোগিতা কেমন হবে সে সম্পর্কে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন “বাংলাদেশ ক্লিয়ারলি আন্ডার-ডগ সন্দেহ নেই। আজ যদি আমরা খুব ইমোশনাল হয়ে বলি বাংলাদেশের ভাল চান্স আছে অন পেপার সেটা ঠিক হবে না বলা। বাংলাদেশ যদি একটা অঘটন ঘটাতে পারে সেটা হবে ম্যাসিভ ম্যাসিভ আপসেট হবে এই টুর্নামেন্টে”।সেই সাথে এখন দারুণ ফর্মে থাকা ইংল্যান্ডকে মোকাবেলা করতে হলে ইংল্যান্ডের মিডল-অর্ডারকে আটকাতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কিন্তু আইসিসি ট্রফির মত আসরে এই রকম একাদশ বাছাই করে নির্বাচকরা অবশ্যই সমালোচনার জায়গা তৈরি করেছেন। ইমরুল কায়েস যেখানে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান, সেখানে মিরাজ থাকলে হয়তো বোলিঙয়ে এত বাজে অবস্থায় পরতে হতনা। যদিও নাসির চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে নেই, কিন্তু এই অবস্থায় একজন দক্ষ অলরাউন্ডারের খুব অভাব টের পেয়েছে বাংলাদেশ।
একমাত্র সাকিবকে নিয়ে পরিকল্পনা করে সব কিছু ভেস্তে যেতে বসেছে। কারণ সাকিবের বর্তমান পারফরমান্স একেবারেই হতাশাজনক।তার বোলিঙয়ের মধ্যে এখন আর তেমন ভাল কিছু দেখা যাচ্ছেন। বাত-বল দুটোতেই সমান ভাবে ফেল করছেন সাকিব। তার পরও একজন বোলার কম খেলানোর সিদ্ধান্ত নিজের পায়ে কুড়াল মারার মত। নাসির অথবা মিরাজ একাদশে থাকলে এই ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। বার বার একাদশ নির্বাচনে ভুল করছে বাংলাদেশ। ফলাফল অসহায় পরাজয়।
মাশরাফিকে মাঠে একরকম অসহায় মনে হয়েছে। কারণ রুবেল মুস্তাফিজ এবং সাকিব কেউই নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি।সাকিব ৮ ওভারে ৬২ রান দিয়েছেন।রুবেল নিজেকে এই ম্যাচে হারিয়ে ফেলেছেন। তাদের বিকল্পও কেউ দলে নেই। পার্ট টাইম বোলার সাব্বির ব্রেক থ্রু এনে দিলে ১ ওভারে দিয়েছেন ১৩ রান। মোসাদ্দেক ৭.২ ওভার বল করে ৪৭ রান দিয়েছেন।
কিন্তু রিয়াদের মত একজন পরিক্ষিত বোলার থাকতেও মাশরাফি কেন তাকে ব্যবহার করলেন না সেই প্রশ্ন ক্রিকেট প্রেমীদের।
আজ শুক্রবার মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। শাকিল আনোয়ার বলছেন “অস্ট্রেলিয়া দলের যে চারজন দুর্ধর্ষ পেস বোলার রয়েছেন তাদের কে আজ নামানো হবে কিনা চিন্তা-ভাবনা চলছে। যদি নামানো হয় তাহলে নিউজিল্যান্ড বিপদে পরবে”।
আবার নিউজিল্যান্ড ইংল্যান্ডের আবহাওয়া এবং পিচ ভালো বোঝে। সুতরাং আজকে একটা ভালো লড়াই হবে বলে মনে করছেন তিনি।