রোজা কি ও কেন ?

---
“কেন আমরা রোজা রাখব” আজকের লেখার শিরোনাম হলো “রোজা কি ও কেন” সব কথার এক কথা হলো আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জাত আমদেরকে কেন দুনিয়াতে পাঠালেন, তার উদ্দেশ্য কি? উদ্দেশ্য একটাই আমরা যেন তার এবাদত বন্দেগী করে ঈমান নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে জান্নাত লাভ করতে পারি।
আল্লাহর নৈকট্য ও রেজামন্দি হাসিল করার জন্য বৎসরে কয়েকটি দিন বা মাস আসে, তার মধ্যে একটি মাস হলো রোজার মাস। আরবী ১২ মাসের একটি মাসের নাম হলো রমজান মাস আর এই রমজান মাসেই আল্লাহ পাক আমদের উপর রোজাকে ফরজ করেছেন। রোজা শব্দটি ফারসি , এর আরবী হলো সওম। সওম শব্দটি বাবে নাসারার মাসদার এর অর্থ হলো বিরত থাকা। ইংরেজীতে বলা হয় ঋধংঃরহম মহান আল্লাহর সন্তোষ্টি অর্জনের নিমিত্তে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য , পানীয় ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাই সওম।সওম বা সিয়াম হলো প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম নরনারী সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বাধ্যতা মূলক ভাবে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস এবং অশ্লীল, গর্হিত প্রভৃতি কাজকর্ম, কথাবার্তা থেকে বিরত থাকা।(ফাতহুল বারি)।
ব্যক্তির আধ্যাত্মিক চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন ও তাকওয়ার প্রশিক্ষন গ্রহনের নিমিত্তে ইসলামে সাওমের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। নৈতিকতা ও চরিত্র গঠনে সওম বা রোজার ভূমিকা অপরিসীম। মহানবি (স:) এর হাদিস গুলোতে রমজানের রোজার গুরুত্ব মহা পুরুষ্কার ও মর্যাদার কথা বিবৃত হয়েছে।
রাসুল (স:) বলেন আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব ১০গুন থেকে ৭০গুন সওয়াব পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, রোজার সওয়াবের ব্যাপারে কোন সীমাবদ্ধতা নেই। কেননা বান্দা আমার সন্তুষ্টির জন্যই রোজা রাখে। তাই আমি বিশেষ ভাবে স্বীয় তত্ত্বা বধানে তার প্রতিদান প্রদান করব।(সুবহানাল্লাহ) রাসুল (স:) আরও বলেন রোজাদারদের জন্য দুইটি আনন্দঘন মুহুর্ত রয়েছে। একটি হলো দিনভর রোজা রাখার পর ইফতার গ্রহনের সময় এবং দ্বিতীয়টি হলো পরকালে তার প্রভুর সাক্ষাৎ লাভের সময়। নবীজি (স:) বলেন হে আমার সাহাবারা তোমরা জেনে রাখ, রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ তায়ালার কাছে মিশকে আম্বরের চেয়ে অতীব উৎকৃষ্ট।(সুবহানাল্লাহ)
রাসুল (স:) আরও বলেন যে ব্যাক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে ও নেকীর আশায় রমজানের রোজা রাখাবে আল্লাহ তায়ালা তার আগের গোনাহ গুলো মাফ করে দিবেন। এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধ থেকে বাচার জন্য রোজা হলো ঢাল স্বরূপ।অতএব আমরা যারা ইচ্ছা করে রোজা পরিহার করি তাদের নিকট আমি গুনাহ গারের পক্ষ থেকে আকুল আবেদন, আমরা যেন রোজা পরিহার না করি। যত কষ্টই হউক আমরা রোজাকে পরিহার না করি। আল্লহ রাব্বুল ইজ্জাত আমাদেরকে যেন পাঁচ ওয়াক্ত নামজ ও রোজা গুলি রাখার তৌফিক এনায়েত ফরমান। (আমীন)
বৈজ্ঞানিক ও ডাক্তারদের গবেষনা মতে রোজা রাখা স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারী । ভারতের মহাত্মা গান্ধী রোজা রাখাকে পছন্দ করতেন এবং তিনি নিজেও সারা দিন উপোস থাকতেন। পরিশেষে আমি গুনাহগার আপনাদের নিকট দোয়া চেয়ে এখানেই ইতির রেখা টানলাম।
ওয়ামাআলাইনা ইল্লাল বালাগ
আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
এ.কে.এম মুহিব্বুল্লাহ হাশেমী
ফতেহবাদ ছিদ্দিকিয়া খানকা শরীফ
দেবিদ্বার, কুমিল্লা।