g দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া টলিউডের অভিনয়শিল্পীরা | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শুক্রবার, ২৮শে জুলাই, ২০১৭ ইং ১৩ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া টলিউডের অভিনয়শিল্পীরা

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ২৯, ২০১৭

---

 

বিনোদন ডেস্ক : সারা বিশ্বে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দুর্ঘটনার শিকার হন অভিনয়শিল্পীরাও।

কিছুদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ভারতের মডেল সোনিকা। আহত হন ভারতের জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেতা বিক্রম চ্যাটার্জি। এ ছাড়া টলিউডের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরাও ব্যক্তিগত জীবনে নানা সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তারা।

মিমি চক্রবর্তী : মিমি চক্রবর্তী অনেকবার দুঘর্টনার হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। এ অভিজ্ঞতা মিমির নতুন নয়। এ প্রসঙ্গে মিমি জানিয়েছেন, শো শেষ করে ফেরার পথে এই ধরনের অভিজ্ঞতা বেশি হয়েছে। তার কারণও রয়েছে- শোয়ের সময় ড্রাইভারদের এত পরিশ্রম করানো হয় যে, অনেক সময় ওরা গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়ে। তাই শোয়ের সময় আয়োজকদের ড্রাইভারের পাশাপাশি মিমি তার ব্যক্তিগত ড্রাইভারকেও সঙ্গে নিয়ে যান। মিমি বলেন, ‘অনেক সময় দেখেছি, গাড়ি চালাতে চালাতেই ড্রাইভার ঝিমোচ্ছে। তখন কোনো রকম ঘুম ভাঙিয়ে ফের রওনা দিয়েছি। তাই এখন নিজের ড্রাইভারকেও নিয়ে যাই।’

গাড়িতে বসে দু’চোখের পাতা এক করা একেবারেই অপছন্দ এই অভিনেত্রীর। তবে ক্লান্তি বা অন্য কোনো কারণে ঘুমিয়ে পড়লেও চালকের পাশের আসনে বসা ব্যক্তিগত বাউন্সারকে তিনি কড়া নির্দেশ দিয়ে রাখেন, যাতে ড্রাইভার কোনো অবস্থাতেই ঘুমিয়ে না পড়েন।

সোহম চক্রবর্তী : ২০১০ সালে আসানসোলে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন সোহম চক্রবর্তী। শো শেষে করে কলকাতায় ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এসইউভি গাড়িটি উল্টে গিয়ে মাঝ রাস্তায় আছড়ে পড়েছিল। এ প্রসঙ্গে সোহম জানান, একেই বোধয় ঈশ্বরের আশীর্বাদ বলে। সেদিন কারো শরীরে একটা আঁচড় পর্যন্ত লাগেনি।

এ সময় সোহমের ‘অমানুষ’ সিনেমার শুটিং চলছিল। এ ঘটনার বর্ণণা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পরদিন আমার কলটাইম ছিল ভোর ৪টায়। যাইহোক, কোয়ালিস গাড়ির ড্রাইভারের পাশের সিট এবং শেষের সারিতে আমাদের বডিগার্ডরা বসেছিল। মাঝের সারিতে ছিলাম আমি আর পার্থ। এ সময় গাড়ির গতি ছিল ১৬০ কিলোমিটার। সারা দিনের ধকল শেষে মাত্র চোখ দুটি বন্ধ করেছি। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে চমকে উঠি। হাত থেকে মোবাইলটা ছিটকে পড়ে যায়। চোখ খোলার পর দেখি, গাড়িটা রাস্তায় টাল খাচ্ছে। চাকা হেঁচড়ে যাওয়ার বিকট শব্দ। ড্রাইভার প্রাণপণে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কয়েকবার টাল খাওয়ার পর পুরো গাড়িটাই উল্টে গিয়েছিল। এ সময় গাড়িটি চারবার ডিগবাজি খেয়েছিল। ধরেই নিয়েছিলাম আর বাঁচব না। তবে ওই যাত্রায় সবাই বেঁচে যাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘দুর্ঘটনার কিছু আগে জানলার কাচ তুলে এসি চালাতে বলেছিল পার্থ সারথি। সেদিন গাড়ির কাচ তোলা না থাকলে গাড়ির বাইরে ছিটকে বেরিয়ে যেতাম। পরে জানলার কাচ ভেঙে কোনমতো সবাই গাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। পরে জানতে পারি, দুর্ঘটনার সময় গাড়ির চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।’

অঙ্কুশ হাজরা : ব্যক্তিগত জীবনে অঙ্কুশ হাজরাও একাধিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। গভীর রাতে শহরের বড় মোড়গুলো সবচেয়ে বিপজ্জনক। বাস্তব অভিজ্ঞতায় এমনটাই দেখেছেন এই অভিনেতা। তিনি জানান, সবাই নিজেকে রাজা মনে করে। সিগন্যাল মানতে চায় না। বিশেষ করে বড় ট্রাক আর পিকআপ ভ্যানগুলো। একবার শো শেষে ফেরার পথে হাইওয়েতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন এই অভিনেতা। এ প্রসঙ্গে অঙ্কুশ বলেন, ‘সেদিন প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। হাইওয়ে ধরে কলকাতায় ফিরছি। গাড়ির গতি ৫৫-৬০ কিলোমিটার। হঠাৎ দেখি, কুয়াশার মধ্যে বিশাল একটা ট্রেইলার ট্রাক রাস্তার উপর দাঁড় করানো। ড্রাইভার কোনো রকমে সে যাত্রায় বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছিল আমাদের গাড়িটা। আরেকটু হলে গাড়িটা ট্রেইলারের ভেতরে ঢুকে যেতে পারত। ওই ট্রাকে পার্কিং লাইট পর্যন্ত ছিল না।’

গাড়ি ড্রাইভ করতে ভিষণ পছন্দ করেন অঙ্কুশ। চালকের আসনে বসেও দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন তিনি। তারাতলা ব্রিজের নীচে ১৮ চাকার একটা ট্রেইলার অঙ্কুশের প্রিয় বিএমডব্লিউ পিষে দিয়ে চলে গিয়েছিল। এ ঘটনা প্রসঙ্গে অঙ্কুশ বলেন, ‘ট্রাকটা ট্রাফিকে দাঁড়িয়েছিল। ট্রাকের বাঁ দিকের ট্রাফিকে গিয়ে আমি দাঁড়াই। সিগন্যাল সবুজ হওয়ার পর ট্রাকটা বাঁ দিকে মোড় নেয়। আর পুরো ট্রেইলারটা আমার গাড়ি ঘষে বেরিয়ে যায়। তখন গাড়ির ডানদিকের লুকিং গ্লাসটা ভেঙে গিয়েছিল। আমি চিৎকার করেছিলাম তাতে লাভ হয়নি। পরে খেয়াল করলাম, ওই ট্রাকের বাঁ দিকে কোনো লুকিং গ্লাস নেই। পরে আমার গাড়ি রঙ করতে এবং সাইড মিরর লাগাতে প্রায় ৮৮ হাজার রুপি খরচ হয়েছিল।’

হিরণ চ্যাটার্জি : মেদিনীপুর শো শেষ করে শহরে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন হিরণ। রাস্তায় পিছলে গিয়েছিল তার গাড়ির চাকা। ওই সময় উল্টো দিক থেকে আসছিল একটি ট্রাক। এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হিরণ বলেন, ‘সম্ভবত তখন বাজকুল এলাকাটা পার হচ্ছিলাম। সে যাত্রায় আমার সিটবেল্ট বাঁধা ছিল বলে বেঁচে গিয়েছি। ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছিলাম। তবে বাঁ হাতের কনুইয়ে আঘাত পেয়েছিলাম। জানলার কাচ ভেঙে কনুইয়ে ঢুকে গিয়েছিল।’ ২০১৩ সালের ঘটনা এটি। হাতে এতটাই ক্ষত হয়েছিল যে, এখনো সে চিহৃ রয়ে গেছে।

এ ছাড়া হিরণের স্করপিও গাড়িটা তিনবার রাস্তার পাশের গর্তে পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় মানুষ এসে উদ্ধার করেন তাকে। এ অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে হিরণ বলেন, ‘তখন রাত সাড়ে ১০টা বাজে। গাড়ি পড়ে যাওয়ার পর কোনোরকমে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে আয়োজকদের ফোন করি।’

কয়েক মাস আগে সাঁতরাগাছি থেকে গাড়ি চালিয়ে কলকাতায় ফেরার সময় দুর্ঘটনায় মুখে পড়েছিলেন হিরণ। পেছন থেকে ধাক্কা খাওয়ায় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন এই অভিনেতা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেই গাড়িটি এখনো ওয়ার্কশপে পড়ে আছে। পরে নতুন গাড়ি কিনতে হয়েছে।’