সাধারণ জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল ছিল ভ্রাম্যমান আদালত
---
সম্প্রতি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট )পরিচালনা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয় -ভ্রাম্যমান আদালত বলে কিছু হলে তা অবশ্যই বিচারিক হাকিম বা মহানগর হাকিম দিয়ে গঠিত হবে। বিচারিক হাকিম বা মহানগর হাকিম দ্বারা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা একদিকে যেমন সময় স্বাপেক্ষ ব্যাপার, অন্যদিকে বর্তমান বিচারক সংকটে কি সম্ভবপর হবে?প্রশ্নটা রাখলাম সম্মানীত পাঠকদের কাছে।
পক্ষান্তরে ২০০৯ সালের ভ্রাম্যমান আদালত আইনের ৫ ধারায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। আমি বলতে চাই, আমরা সাধারণ শ্রেণীর জনতা ও ভোক্তা আইনের এত জটিলতা বুঝিনা। আমরা বুঝি জনগনের মঙ্গলের জনই আইন তৈরী হয়। আইনের জন্য জনগণ নয়।
একথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করবে যে,ফরমালিন মুক্ত, জাটকা নিধন,বাল্যবিবাহ বন্ধ,ইভটিজিং,অসামাজিক কার্যক্রম, জুয়া, মাদক, ফিটনেস বিহীন গাড়ী,লাইসেন্স ছাড়া চালক,ভেজাল পণ্য, নকল,প্রশ্নপত্র ফাঁস,নিম্নমানের পন্য,প্রযুক্তির অপরাধ,মুঠোফোনের প্রতারনাসহ অসংখ্য কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত অগ্রণী ভুমিকা পালন করছেন।আমি মহামান্য আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই আমাদের দেশের ৯০ ভাগ জনগণই আইন আদালত সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ।আমি নিজেও।
এ দেশের সাধারণ জনগনের শেষ আশ্রয়স্থলই ছিল এই ভ্রাম্যমান আদালত। গ্রামের সাধারণ ঘরের স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে স্থানীয় প্রভারশালীর ছেলেরা ইভটিজিং করলে দরিদ্র বাবা অতি সহজেই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতে বিচারের জন্য দ্বারস্থ হতেন এবং সাথে সাথেই বিচার পেয়ে যেতেন। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় বিচারকাজ পৌঁছে দেওয়ার জন্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোন বিকল্প নেই বলে আমি করি। এতে বিচারপ্রার্থীদের সময় ও অর্থ দু-ই সাশ্রয় হয়। তাই আমি সরকার ও মহামান্য আদালতের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাবো, জনগণের জন্যই যদি আইন হয় তাহলে আইন সংশোধন সাপেক্ষে, ন্যায় বিচার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত বন্ধ না করে বরং আদালতের পরিসীমা আরো বৃদ্ধি করার জন্য দুই হাত জোড় করে বিনীত প্রার্থনা জানাচ্ছি ।
লেখকঃ এম .মনসুর আলীঃ সাংবাদিক,সরাইল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া।