ন্যানো স্যাটেলাইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’ উৎক্ষেপণ ২ জুন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের তিন শিক্ষার্থীর তৈরি ন্যানো স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দু্ই ধাপে এটি উৎক্ষেপন করা হবে। প্রথম ধাপে বাংলাদেশ সময় ২ জুন ভোর ৩টা ৫৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের কৃত্রিম উপগ্রহ ‘ব্র্যাক অন্বেষা’ উৎক্ষেপণ করা হবে। সফলভাবে এটি উৎক্ষেপিত হলে দ্বিতীয় ধাপের উৎক্ষেপণের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সোমবার জাপান থেকে ন্যানো স্যাটেলাইট নির্মাণকারী তিন শিক্ষার্থী বিষয়টি বিবার্তাকে নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, দুই ধাপে ‘ব্র্যাক অন্বেষা’ কক্ষপথে স্থাপন করা হবে। প্রথমত, ২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এরপর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) তা পাঠানো হবে কার্গোর (সিআরএস ১১) মাধ্যমে। পরের ধাপে নভোচারীরা তা নিক্ষেপ করবেন কক্ষপথে।
মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম ন্যানো স্যাটেলাইট
ন্যানো স্যাটেলাইটটির নকশা তৈরি, উপকরণ সংগ্রহ, তারপর বানানো—সব কাজই করেছেন বাংলাদেশের তিন শিক্ষার্থী। তারা হলেন রায়হানা শামসইসলাম অন্তরা, আবদুল্লা হিল কাফি ও মাইসুন ইবনে মনোয়ার। দলের তিনজনই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল (ইইই) বিষয়ে স্নাতক।
জাপানের কিউশু ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (কিউটেক) স্নাতকোত্তর পর্বে তাদের পড়ার বিষয়ও এই ন্যানো স্যাটেলাইট। তাদের পড়ার বিষয়ে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে কিউটেকের ‘বার্ডস প্রকল্প’। স্বল্পোন্নত দেশের জন্য ন্যানো স্যাটেলাইট বানানো হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। প্রকল্পের নাম ‘বার্ডস’ হলেও বাংলাদেশি স্যাটেলাইটটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্র্যাক অন্বেষা’। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে এবং কিউটেকের শিক্ষা ও প্রযুক্তি সহায়তায় এই উপগ্রহটি তৈরি করা হয়েছে। এটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতায় ১০ সেন্টিমিটার করে। উপগ্রহটির ওজন প্রায় এক কেজি।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি তিন শিক্ষার্থীর তৈরি কৃত্রিম উপগ্রহটি জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জেএএক্সএ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তিন শিক্ষার্থী বলেন, জাপানে ন্যানো স্যাটেলাইট তৈরি বা যুক্তরাষ্ট্রে উৎক্ষেপণের কাজ হলেও ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণের জায়গাটা (গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন) হবে বাংলাদেশেই। ওই স্টেশন নির্মাণ করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক দল শিক্ষার্থী।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ন্যানো স্যাটেলাইট প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর মো. খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের দলটি ব্র্যাক অন্বেষার পাঠানো সংকেত গ্রহণের জন্য গ্রাউন্ড স্টেশনকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করে রেখেছে। ইতিমধ্যে অন্যান্য স্যাটেলাইট থেকে ডেটা গ্রহণ করা শুরুও করে দিয়েছে এই স্টেশন।