ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তির বিধান রেখে আইনের প্রস্তাব গৃহীত
গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব সংসদে গৃহীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গ্রহণে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সম্মতি দিলে সংসদে তা সর্বসন্মতক্রমে গ্রহণ করা হয়।
এর আগে সরকারি দলের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি এ প্রস্তাবটি আনেন। বাপ্পির প্রস্তাবটি হচ্ছে, সংসদের অভিমত এই যে, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তির জন্য আইন প্রণয়ন করা হোক।’
অবশ্য গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে সরকার ইতোমধ্যে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও আইনমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবের পক্ষে সংসদ সদস্যরা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সবই ঐতিহাসিক সত্য। ইউরোপীয় কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস একটি সিদ্ধান্তেও এই ঐতিহাসিক সত্যের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।’
প্রস্তাবটিকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলব অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং এটা গ্রহণ করা হোক। সেই কারণেই বলতে চাই প্রস্তাব আমরা তা গ্রহণ করলাম। একইসঙ্গে একটি সুখবর দিতে চাই, এই আইনের একটি খসড়া অল রেডি প্রস্তুত হয়ে গেছে। ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকরণ অপরাধ আইন’ নামে আইনের খসড়া অনতিবিলম্বে মন্ত্রিপরিষদে উঠবে। আশা করি, এই সংসদের বয়সকালেই তা পাস হবে ‘
অবশ্য সংসদ সদস্য বাপ্পির মূল প্রস্তাব গ্রহণ করলেও ওই প্রস্তাবে আনীত সংশোধনীগুলো নাকচ করে দেন আইনমন্ত্রী। প্রস্তাবটির ওপর ৯ জন সংসদ সদস্য সংশোধনী আনেন। সংসদে সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার সংসদে ভোটে দিলে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
প্রস্তাব উত্থাপনকালে ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি বলেন, ‘‘২৫ মার্চের কাল রাতে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের বিষয়টি সর্বজনবিদিত। ওই সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। ২৫ মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপরও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ‘বাই চান্স’ মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপি নেতারা শহীদদের সংখ্যা ও স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে একের পর এক মিথ্যাচার করে চলছেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তারা ইতিহাস বিকৃতির খেলায় মেতে ওঠেন। তাই নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস বিকৃতির হাত থেকে বাঁচাতে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।’’
প্রস্তাবিট তথ্য উপাত্তসহকালে উত্থাপনের জন্য সংসদ সদস্য বাপ্পিকে ধন্যবাদ জানান ডেপুটি স্পিকার। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি আনয়নের ক্ষেত্রে যে পরিশ্রম করেছে। এতে যে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছে, তা জতির জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এ জন্য আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’