রক্ত চাপ নাও কমতে পারে লবণ কমালে
অনলাইন ডেস্ক : উচ্চ রক্ত চাপের জন্য লবণ দায়ী- এই প্রচলিত ধারণার বিপরীত ফলাফল পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।দেখা গেছে লবণ বা সোডিয়াম কম গ্রহণ করলেও দীর্ঘমেয়াদে রক্ত চাপ নাও কমতে পারে। ২ হাজার ৬৩২ জন নারী ও পুরুষকে ১৬ বছর পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন গবেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের সহকারি অধ্যাপক লিন মুর বলেন, “খাদ্যাভ্যাসে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে রক্ত চাপ কমে যাওয়ার কোনো উপকারী প্রভাব পাইনি আমরা।” শিকোগোতে এপ্রিলের ২২ থেকে ২৬ তারিখে অনুষ্ঠিত ‘এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি ২০১৭’ শীর্ষক সম্মেলনে গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়। সম্মেলনে আমেরিকার বর্তমান খাদ্যাভ্যাস নির্দেশিকায় সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গবেষকরা।
মুর বলেন, “সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণের উপর বর্তমান সীমারেখা ভুল হতে পারে। আমাদের গবেষণায় এর পক্ষে প্রমাণ রয়েছে।” আমেরিকার ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের জন্য তৈরি ‘ডায়েটারি গাইড লাইনস’ অনুযায়ী সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ প্রতিদিন ২ হাজার ৩০০ মিলিগ্রাম। গবেষণার জন্য ‘ফার্মিংহাম অফস্প্রিং স্টাডি’ নামক এক গবেষণায় অংশ নেওয়া ৩০ থেকে ৬৪ বছর বয়সি ২ হাজার ৬৩২ জন নারী-পুরুষকে পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। গবেষণার শুরুতে অংশগ্রহণকারীদের রক্ত চাপ ছিল স্বাভাবিক।
তবে ১৬ বছর ধরে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গবেষকরা দেখেন, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা দৈনিক আড়াই হাজার মিলিগ্রামের কম সোডিয়াম গ্রহণ করেছেন তাদের রক্তচাপ, যারা আরও বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করেছেন তাদের চাইতেও বেশি।গবেষকরা আরও দেখতে পান, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাদের পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণের পরিমাণ বেশি ছিল, তাদের রক্তচাপ দীর্ঘমেয়াদে কমেছে।
মুর বলেন, “লবণের প্রতি স্পর্শকাতর কিছু শ্রেণির মানুষ সোডিয়াম গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে উপকৃত হতে পারেন। তবে লবণের প্রতি স্পর্শকাতরতা চিহ্নিত করতে এবং এই লবণের প্রতি স্পর্শকাতর ব্যক্তিদের জন্য সোডিয়াম ও পটাশিয়াম গ্রহণের পরিমাণে সঠিক দিক-নির্দেশনা তৈরি করতে আরও বেশি গবেষণা প্রয়োজন।”