‘কোনো বাংলাদেশী যেন আর আইপিএল খেলতে না যায়’
স্পোর্টস ডেস্ক : ‘সব বোলার মাইর খায়, মোস্তাফিজের নাম হয়’। বিষয়টা এখন এরকম হয়ে গেছে। আইপিএলের নবম আসরে অভিষেক হয়েছিল টাইগার পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের।
নিজের অভিষেক আইপিএলে কাটার দিয়ে ঝড় তুলেছিলেন মোস্তাফিজ। সর্বত্র তখন মোস্তাফিজের প্রশংসা। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শিরোপ জয়ে অগ্রনী ভূমিকা রাখেন এ কাটার মাস্টার। নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট। রান দেয়ার ক্ষেত্রে ছিলেন খুবই হিসেবি।
গতবারের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে এবারের আইপিএল খেলতে ভারতে গেছেন মোস্তাফিজ। একটি ম্যাচে হায়দরাবাদের হয়ে মাঠেও নেমেছিলেন। কিন্তু সবকিছু ঠিকমতো হল না। ২.৪ ওভারে দিলেন ৩৪ রান। উইকেটও পাননি। ওই ম্যাচের পর থেকেই যেন এবারের আসরে মোস্তাফিজের জন্য আইপিএলের দরজা বন্ধ হয়ে গেল!
একের পর এক ম্যাচে বসিয়ে রাখা হচ্ছে টাইগারদের পেস আক্রমণের এই তরুণ তুর্কীকে।
এবারের আইপিএলটা ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। অধিকাংশ ম্যাচেই ২’শ-এর কাছাকাছি রান হচ্ছে। সব বোলারকেই তুলোধুনো করে রান করছেন ব্যাটসম্যানরা। এখানে বোলারদের জন্য কিছুই নেই।
হাতেগোনা দুই একজন ছাড়া সবাই যেখানে ব্যর্থ সেখানে মোস্তাফিজই যেন এক ম্যাচ রান দিয়ে পাপ করে ফেললেন। তাকে বসিয়ে রেখে সাইড বেঞ্চ গরম করাচ্ছেন হায়দরাবাদ কর্তৃপক্ষ।
এবারের আসরে সবচেয়ে বেশি দামে কেনা হয় অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে। তিনিও বল ও ব্যাট হাতে ব্যর্থ। তবুও নিয়মিতই রাইজিং পুনের হয়ে খেলে যাচ্ছেন। টাইমাল মিলসকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামে কেনে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালোর। তিনিও বল হাতে ব্যর্থ। তবুও একাদশে নিয়মিত।
কিন্তু হায়দরাবাদের হয়ে এক ম্যাচে বল হাতে ব্যর্থ হওয়াটাই যেন কাল হল মোস্তাফিজের। গত আসরে শিরোপা জয়ে মোস্তাফিজের যে অবদান তা যেন ভুলেই যেতে বসেছে হায়দরাবাদ।
প্রিয় খেলোয়াড়কে ম্যাচের পর ম্যাচ দর্শক হিসেবে বসে থাকতে দেখে যারপরনাই বিরক্ত টাইগার ভক্তরা। অনেকেই হয়তো আগ্রহ নিয়ে বসে থাকেন মোস্তাফিজকে খেলানো হবে। কিন্তু যখন স্কোয়াডে মোস্তাফিজের নাম না দেখেন তখন রাগ করেই হয়তো টিভি বন্ধ করে দেন।
শনিবার রাইজিং পুনের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে সানরাইজার্স। এই ম্যাচেও মোস্তাফিজকে রাখা হয়েছে দর্শক করে।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই রাগে ক্ষোভে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। তারা মোস্তাফিজকে দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন।
আসগার খান নামের একজন লেখেন, ‘খেলার দরকার নাই, তাড়াতাড়ি বাংলার ছেলে বাংলায় ফিরে আয়।’
খন্দকার মিলানুর রহমান নামের একজন লেখেন, ‘এটি বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের প্রতি চরম অবিচার ছাড়া আর কিছুই নয়।’
আবু সাঈদ লেখেন, ‘এক ম্যাচ পিচের কারণে হয়ছে। কিন্তু বাকি একটি মাচ খেলানো উচিত ছিল।’
এ.এম আতিক লেখেন, ‘মোস্তাফিজ আর আগের মতো নাই,,, তাছাড়া ভারত তো সব সময় আমাদেরকে বাঁশ দিতে প্রস্তুত।’
মুস্তাক আকবর নামের একজন লেখেন, ‘কোনো বাংলাদেশী খেলোয়াড় যেন আর আইপিএল খেলতে না যায়, এটা আমার আহ্বান।’
মিলন রয়াল লেখেন, ‘ওরা অতি সহজে মোস্তাফিজকে পেয়েছে, তাই একটি ম্যাচ খেলিয়েই দিনের পর দিন বসিয়ে রাখছে।’
মো. সাইমুল লেখেন, ‘মালিঙ্গা তো মোস্তাফিজের চাইতে কম ভালো নয়, যাকে টি ২০ তে বোলিং এর রাজা বলা হয়.. সে মুম্বাই এর হয়ে কয়েকটা ম্যাচে রান দিয়ে হাফ সেঞ্চুরি করছে। অথচ মুম্বাই তাকে নিয়মিত খেলাচ্ছে। কিন্তু মোস্তাফিজ মাত্র একটি ম্যাচ বাজে খেলার কারণে বসিয়ে রাখা হচ্ছে!!! এইটা তার প্রতি অবিচার, অপমান, এর কোনো লজিক নাই।’
নুর ইসলাম লেখেন, ‘ভারতের আসল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেট ধ্বংস করা। তাই টাকার লোভ দেখিয়ে ভালো খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কবরস্ত করার পাঁয়তারা করছে।’ যুুগান্তর