জঙ্গি সন্দেহে রাবির তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে এই তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দেয়া হয়।
আটককৃতরা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের জুবায়ের হোসেন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের মাকসুদুল হক এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের আল তৌফিক। তারা প্রত্যেকেই ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী।
এদের মধ্যে জুবায়ের হোসেন জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের পোস্টারের প্রতি নিজের ভালো লাগার বিষয়টি সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে ‘আইএস সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগে জুবায়ের হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় জুবায়ের স্বীকার করে যে আইএস তাদের ফেসবুক পেজে যা শেয়ার করে তা তার ভালো লাগে। পরবর্তীতে তার ফোন থেকে তথ্য নিয়ে সেখানে মাকসুদুল হককে ডেকে আনা হয়।
এ সময় আল তৌফিককেও দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে এই তিনজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় সাংবাদিকদের সামনে জুবায়ের হোসেন বলেছেন, তারা (আইএস) যে কাজগুলো করে সেগুলো ঠিক না বেঠিক তা বোঝার জন্যে আমি ফেসবুকে তাদের পোস্টগুলো পড়তাম। কোরআন হাদিস থেকে সেখানে লেখা থাকতো, জিহাদ সম্পর্কেও লেখা থাকতো। তাদের লেখা ভালো লাগে। তাদের কার্যক্রম নিয়ে মওলানাদের সাথে কথাও বলতাম। এসব বিষয় নিয়ে আমি কনফিউজড (দ্বিধান্বিত)। কিন্তু আমি তাদের সাথে যুক্ত হইনি।
এ সময় তার ফোন থেকেই তার ফেসবুক প্রোফাইল মধ্যরাতের অশ্বারোহী-তে গিয়ে বিভিন্ন পোস্ট এবং তার ফোনে আইএস’র বিভিন্ন বিষয় ও যুদ্ধের ভিডিও পাওয়া যায়। সেই মুহূর্তে তার ম্যাসেঞ্জারে বার্তা পাঠায় ‘শেষ স্টেশন কবরস্থান’ নামের আইডির মালিক মাকসুদুল হক। বার্তায় সে জানতে চায়, ছাত্রলীগকর্মীরা তাকে (জুবায়েরকে) কিছু করেছে কিনা। পরে বিনোদপুর থেকে তাকেও তুলে নিয়ে আসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ আইডিকে খেয়াল করছিল আমাদের নেতাকর্মীরা। পরে বৃহস্পতিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় জঙ্গি সম্পৃক্ততার কিছু প্রমাণ আমরা পাই। আর তার সহযোগী হিসেবে মাকসুদুল হক এবং জঙ্গিবাদে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহে আল তৌফিককে পুলিশে দেয়া হয়েছে।
মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেছেন, জঙ্গি সন্দেহে তিনজনকে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।