রিয়ালের জয়ে রেফারিং নিয়ে বিতর্কের ঝড়
স্পোর্টস ডেস্ক : ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরিত লেগে বায়ার্ন মিউনিখকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ওই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু ম্যাচের রেফারিং নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই ম্যাচ পরিচালনা করেন হাঙ্গেরির রেফারি ভিক্টোর কাসাই। তিনি এদিন একাধিক সিদ্ধান্ত রিয়ালের পক্ষে দিয়েছেন বলে বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনার সমর্থকদের অভিযোগ। এমন কি দুই দলের খেলোয়াড়রাও এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। রিয়ালের জয়কে ‘ডাকাতি’ বলে অভিহিত করেছেন বায়ার্নের দুই খেলোয়াড় আরিয়েন রোবেন ও আরতুরো ভিদাল। এদিন ম্যাচের ৮৪ মিনিটে আসেননিওকে ফাউল করার দায়ে বায়ার্নের মিডফিল্ডার আরতুরো ভিদালকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এতে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বায়ার্ন।
বায়ার্নের সমর্থকরা মনে করেন, এই হলুদ কার্ড দেখার মতো ফাউল ছিল না। অন্যদিকে রিয়ালের ক্যাসেমিরো বায়ার্নের ফরোয়ার্ড আরিয়েন রোবেনকে মারাত্মক ফাউল করলেও তাকে হলুদ কার্ড দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তবে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- অতিরিক্ত সময়ে করা রোনালদোর দুই গোল। ওই দুই গোলই রোনালদো অফসাইড থেকে করেন বলে অভিযোগ। ম্যাচের ১০৪ মিনিটে রামোসের উঠিয়ে দেয়া বল ডি-বক্সের মধ্যে বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ-পায়ের শটে নয়ারকে পরাস্ত করেন রোনালদো। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় অফসাইড ছিলেন পর্তুগিজ এই তারকা। আর ১০৯ মিনিটে ডি বক্সে মার্সেলোর দারুণ পাসে হ্যাটট্রিক করেন রোনালদো। অভিযোগ- এ গোলের সময়ও অফসাইড ছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্রথম শততম গোলের দেখা পাওয়া রোনালদো।
এ বিষয়ে ম্যাচ শেষে মুখ খুলেছেন বায়ার্নের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এ কোচ বলেন, ‘আমি শুধু এতটুকুই বলবো যে, রেফারিং খুবই বাজে হয়েছে। সামনে তারসঙ্গে দেখা হলে শুধু তাকে বলবো- খুবই ভাল কাজ করেছ।’ ভিদালের লালকার্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই তার (ভিদাল) আরো শান্ত থাকা দরকার ছিল। তবে দ্বিতীয় কার্ডটা সে পায় না। এটা রেফারির ভুল ছিল।’
আর লালকার্ড দেখা ভিদাল বলেন, ‘এটা ডাকাতি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এমন ডাকাতি চলতে পারে না। রেফারির এমন সিদ্ধান্ত চ্যাম্পিয়ন্স লীগ নিয়ে আপনার মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেবে। আমরা সেমিফাইনালে ওঠার পথে ছিলাম। কিন্তু রেফারিই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিলেন। তিনি অনেক ভুল করেছেন। তিনিই আমাদেরকে ইউরোপিয়ান লড়াই থেকে ছিটকে দিলেন।’
বায়ার্নের ডাচ ফরোয়ার্ড আরিয়েন রোবেন বলেন, ‘বিশ্বের সেরা দু’টি দলের খেলা উপভোগ করেছে দর্শকরা। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণূ ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময় রেফারির একটি ভুল সিদ্ধান্তই হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিতে পারে। আরি রেফারিং নিয়ে কিছু বলবো না। পরে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি নিজেই ভেবে দেখবেন।’
এছাড়া বায়ার্নে আরেক ফরোয়ার্ড ফ্র্যাঙ্ক রিবেরি ইনস্টাগ্রামে দু’টি ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখিয়েছেন, কিভাবে অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলই অফসাইড থেকে করেন রোনালদো। ছবির নিচে তিনি লেখেন, ‘গোল দান’ ও ‘এক বছরের পরিশ্রম। ধন্যবাদ রেফারি’।
অন্যদিকে টুইটারে কোনোকিছু না লিখেও সমালোচনা করেছেন বার্সেলোনার ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে। তিনি সবসময় রিয়ালের কট্টর সমালোচক। ম্যাচ শেষে তিনি টুইটারে মাত্র তিনটি ফোটা দিয়ে ফাঁকা টুইট করেন। তার এমন সমালোচনা রিয়ালের অধিনায়ক সার্জিও রামোসে সামনে নেয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি তার এমন আচরণে মোটেও অবাক হইনি। পিএসজি’র বিপক্ষে তাদের ম্যাচে রেফারি কী করেছিল সেটা নিয়ে তার ভাবা উচিৎ।’