শুক্রবার, ৭ই এপ্রিল, ২০১৭ ইং ২৪শে চৈত্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রেখেই সবকিছু করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ৫, ২০১৭

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে তা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছুই করা হবে না। একটি স্বাথান্বেষী মহল ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২৫ বছরের সমঝোতা চুক্তিকে গোলামির চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তুু এই চুক্তি থেকে সীমান্ত সমস্যা সমাধানসহ বাংলাদেশেরই অর্জন বেশি।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটির প্লটের বরাদ্দপত্র পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৫ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে বিতরণকালে প্রধান অতিাথর ভাষণে একথা বলেন।

অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতির জন্য শেখ হাসিনা দেশের পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলোকেই দায়ী করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া কখনও ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। উপরন্তুু তারা সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে উদাসীন ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত তাদের শাসনামলে দেশের ভেতরের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের মূল হোতা ছিল। ওই অস্ত্র বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চোরাচালান হয়ে ভারতে যাচ্ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব অটুট রেখেই সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে। একইসঙ্গে একইভাবে ভারত এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা সমস্যারও সমাধান করেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও অনেকেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে গৃহীত আমাদের অ্যাকশনপ্লান নিয়ে সমালোচনা করেছে।
কিন্তু বাংলাদেশই পৃথিবীতে একমাত্র দেশ যারা জঙ্গিদের অ্যাকশনের আগেই বহু জঙ্গি আস্তানা গুড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছে।

পুলিশদের কর্তব্য পালনের কোনো নির্দিষ্ট ডিউটি আওয়ার না থকায় তাঁদের দায়িত্ব পালনকে অত্যন্ত কঠিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো সময় ডাক পড়লেই তাঁদের যেতে হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশের জনসংখ্যার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আরো বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৪১ হাজার পুলিশ সদস্যকে বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই আরো ১০ হাজারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং তাঁদের পরিবার-পরিজনদের কল্যাণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারই প্রথম ২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তাঁর সরকার অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদেরও আবাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে ১৭ বছর লেগে গেছে।

এ ব্যাপারে আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের জন্য এ ধরনের আবাসন সুবিধা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও সম্প্রসারণ করা হবে।

এর আগে পুলিশের আইজিপি মো. শহীদুল হক শত প্রতিকূলতা সত্বেও পুলিশ হাউজিং সোসাইটিকে বাস্তব রূপ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।