এবার প্রকাশ্যে সদরের এমপিকে তুলোধুনো করলেন বক্তারা
আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মনবাড়িয়া : আড়ালে আবডালে নয়, প্রকাশ্যে জনসম্মুখে হাজার হাজর মানুষের সামনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর আসনের এমপিকে তুলুধুনো করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতারা। সে সাথে নাসিরনগরের হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির ভঙ্গের অভিযোগ উত্থাপন করেছেন স্থানীয় এমপির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নব-নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এম,এস,সি ও জেলা পরিষদের সব নির্বাচিত সদস্যদের সম্মিলিত নাগরিক সমাজ কর্তৃক গনসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে বিষোদাগার করে বক্তব্য দেন। বিকেলে আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী এডভোকেট ছায়েদুল হক এমপি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী সদর আসনের সংসদ সদস্যের নাম ও দলের সাধারন সম্পাদকের নাম উল্লেখ করে বলেন, টাকার বিনিময়ে মদ ব্যবসায়ীকে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি ২ জনের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাদের কারনে নাসিরনগর বিশ্ব সংবাদে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রাম থেকে আজ শহরে এসেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। ঐতিহ্য রক্ষায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। নাগরিক সমাজের সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি তাজ মোঃ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ও অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা আমানুল হক সেন্টু, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী মিনারা আলম, অধ্যক্ষ্য শাহজাহান আলম সাজু, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট শাহানুর ইসলাম, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি এডভোকেট কাউসার আহম্মেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশীদ প্রমূখ।
ব্রাহ্মনবাড়িয়া সরাইল আসনের সংসদ সদস্য এভভোকেট জিয়াউল হক মুধা বলেন, বিগত নির্বাচনে প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে সদর আসনের এমপি তার এলাকায় এক প্রার্থীকে দাঁড় কড়িয়ে দেন। তিনি নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন তার বিরুদ্ধে। জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা আমানুল হক সেন্টু বলেন, একজন সৎ মন্ত্রীকে অপমান করতে নাসিরনগরে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি নষ্ট করেছেন। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, সায়েদুল হককে দল থেকে বহিষ্কারের চেষ্টা করেছে তারা। সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, এই সময়ে মানুষ নানা ভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা কারো দ্বারা ব্যবহৃত হবে না। তারা দাঙ্গা লাগিয়ে পালিয়ে যাবে। তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর-০৩ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মন্ত্রীদের এলাকায় আসতে দেয়া হয় না। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যানার, ফেষ্টুন চুরি করা, নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া ও গাড়ি আটকে দেয়ার অভিযোগ করেন তিনি। শ্রমিকলীগের সভাপতি এডভোকেট কাউসার আহম্মেদ বলেন, হাইব্রীড নেতাদের কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা আজ কোনঠাসা। যারা রাজপথে ছিল না তাদের দাপটে ত্যাগী নেতারা টিকতেই পারছে না। সমাবেশের পূর্বে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ বৈঠা মিছিল করে সমাবেশে আসে। এতে মুক্তমঞ্চ ও আশপাশ এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এ সময় শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।