ঢাকা-চট্রগ্রাম ডাবল রেললাইন প্রকল্প সমাপ্তির পথে
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাবল রেল লাইনের লাকসাম-আখাউড়ার অবশিষ্ট ৭২ কিলোমিটারের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। বাকি অংশের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন যোগাযোগের সময় সীমা এক ঘণ্টা কেমে যাবে।
উল্লেখ্য, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত বছরের ১৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে লাকসাম থেকে চিনকীর আস্তানা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩২১ কিলোমিটার পুরো রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত হবে। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচলের সময় এক ঘণ্টা কমে আসবে। প্রতিটি ট্রেন আগের চেয়ে এক ঘণ্টা আগে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছবে। সুবর্ণ এক্সেপ্রেস এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ৪ ঘন্টা ১০ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম পৌঁছবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মধ্যে ২৪৯ কিলোমিটার রেললাইন ইতিমধ্যে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়েছে।
এই ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোজাম্মেল হক জানান, কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আমি মঙ্গলবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছি। গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর থেকে পরবর্তী চার বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে। এ প্রকল্পে ১২টি মেজর ব্রিজ ও ৪৭টি মাইনর ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করতে হচ্ছে। ১১টি নতুন স্টেশন ও ১১টি রেলওয়ে স্টেশন ভবনও পুননির্মাণ করতে হচ্ছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডাবল লাইন নির্মাণের পাশাপাশি একইসঙ্গে বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা হচ্ছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের কাজ যাতে দেড় বছর কমিয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে শেষ করা যায় এজন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। প্রকল্পটির কাজ করছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (চীন), ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও তমা কনস্ট্রাকশন।
এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক, ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে সরকারের নিজস্ব অর্থের পরিমাণ হচ্ছে এক হাজার ২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যাত্রার সময় অনেকাংশে কমে আসবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মালামাল (কনটেইনার) পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। ট্রেন লাইনচ্যুতির কারণে একটি লাইন বন্ধ থাকলে অপরটি চালু থাকবে। দুর্ঘটনাও কমে আসবে।
রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরে উচ্চতর এক্সেল লোকোমোটিভ দিয়ে ট্রেন পরিচালনা করা যাবে। ট্রেন চলাচলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে এবং লাইন ক্যাপাসিটি ২৩ জোড়া থেকে বেড়ে ৭২ জোড়ায় উন্নীত হবে।