বাঞ্ছারাপুরের প্রতিবন্দ্বী মোকছেনা স্বপ্ন বুঁনছে
---
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি : দুটি হাত আর একটি সেলাই মেশিন।তা-দিয়েই নিরন্তর সংগ্রাম করছে মোকছেনা। দিনরাত বাড়ি-বাড়ি খুজে আর চেয়ে-চিন্তে সেলাইয়ের কাপড় জোগাড় করাই তার নিত্যকার ভাবনা। পরিবারে রুটি-রুজি কিছুটা ভালো হয় যদি আরেকটি সেলাইয়ের মেশিন থাকতো।মোকছেনাদের পরিবার একটি।সদস্য ৫জন। তারমধ্যে ৩জনই যদি প্রতিবন্দ্বী বাঁমুন আকৃতির হয়,তবে-সে পরিবারে কষ্টের শেষ গন্তব্য সবারই জানা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের অন্তগত নগরীরচর গ্রামের প্রতিবন্দ্বী বামুন মো.মাহিউল্লাহ’র ২ কন্যা আর ১ ছেলের মধ্যে ৩জনই প্রতিবন্দ্বী।তারা সবাই বামুন আকৃতির।বড় মেয়ে মাজিয়া আক্তার (২৭) স্বামী পরিত্যাক্তা।
আরেক প্রতিবন্দ্বী ছোট মেয়ে মোকছেনা আক্তার(২০) বহু কষ্টে স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হয়।কেবল অর্থাভাবে এক বছর ধরে পড়াশুনা বন্ধ করে বাড়িতে বসে সেলাইয়ের কাজ করে পরিবারের দু-বেলা আহারের ব্যবস্থা করার জন্য দিনরাত শ্রম দিচ্ছে।মোকছেনা জানায়,সংসারে আমার আম্মা গত ১৫ বছর ধরে ডায়াবেটিসে আর বাবার ষ্ট্রোক করে ৫ বছর আগে।তার আগে শত প্রতিক’লতা সত্বেও,তিনি ব্যবসা করতেন।পরিবারের একমাত্র ছেলে বিদেশে গিয়েছিলো একবুক স্বপ্ন নিয়ে।কিন্তু,দালালের ভুল কাগজপত্রের কারনে সে আশার গুড়েবালি।
পরিবারটির সাথে কথা বলে জানা গেছে,৫ সদস্য পরিবারটি চলছে সেলাইয়ের উপর ভর করে।প্রতিবন্দ্বী ও বামুন আকৃতির দু বোন মোকছেনা আর মাজিয়া দিনরাত সেলাই করে। তারপরও,কারো দয়ায় বাঁচতে চায় না প্রতিবন্দ্বী পরিবারটি।
পরিবার কর্তা মাহিউল্লাহ শয্যাশায়ী অবস্থায় ধীরে-ধীরে বলেন,-‘‘আমার ২ বিবাহযোগ্যা মেয়ে আর আমি নিজে বামুন আকৃতির প্রতিবন্দ্বী।এ যাবত কোন সরকারি সহায়তা পাই নাই।প্রতিবন্দ্বী হওয়া সত্বেও সমাজের তীক্ষè চোঁখ-আ ঠাট্রা পরোয়া না করে মোকছেনা কলেজ অব্ধী গিয়েছে।সে মেধাবী।তাকে যদি কেউ একটা চাকুরী দিতো !”
মোকছেনার মা আজমিরী বেগম বলেন,‘আমার ২ প্রতিবন্দ্বী মেয়েই,আমার শক্তি।তাদের ১টি সেলাই মেশিনে কাজ করায়, চুলায় হাড়ি চড়ে।’
এবিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শওকত ওসমান বলেন, পরিবারটি নিদারুন কষ্ট আর সংগ্রাম করে বেচে আছে।সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালায় তারা।প্রতিবন্দ্বী হওয়া সত্বেও সেলাই মেশিনের সাহায্যে একটি পরিবারের যুদ্ধজয় আর স্বাবলম্বীতার এরচেয়ে বড় উদহারন আর কি হতে পারে ? তার আরেকটি সেলাই মেশিন ও মোকছেনা আর্থিক সাহায্য পেলে কলেজে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারতো’