নারায়ণগঞ্জে সাত খুন: নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক কর্মকর্তাসহ ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
---
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া বাকি ৯ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন আজ সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন।
সোমবার সকাল ১০টায় বিচারক রায় পড়া শুরু করেন এবং সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করে ১০টা ৬ মিনিটে এজলাস ত্যাগ করেন।
আদেশের পর বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, আদালত নূর হোসেন ও তারেক সাঈদসহ ২৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি ৯ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এর আগে এই মামলায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার ও কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে থাকা আসামিদের বেলা সাড়ে ৯টার দিকে আদালতে হাজির করা হয়।
রায় ঘোষণার সময় মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ২৩ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৭ জন র্যাবের সদস্য। মামলার শুরু থেকেই র্যাবের সাবেক ৮ সদস্যসহ ১২ আসামি পলাতক।
সাত খুনের মামলায় মোট ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। কারাগারে থাকা বাকি আসামিরা হলেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, তার সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আবুল বাশার ও মোর্তুজা জামান (চার্চিল)।
পলাতক আসামিরা হলেন করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান এবং নূর হোসেনের সহযোগী সেলিম, সানাউল্লাহ ছানা, ম্যানেজার শাহজাহান ও ম্যানেজার জামাল উদ্দিন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ, পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত বাকিরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।
ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। এই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। পরে দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ।