শিগগির বড় হামলা হতে পারে : ওবায়দুল কাদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে গেলেও তারা তলে তলে প্রস্তুতি নিয়ে আছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ধারাবাহিক অভিযানে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে গেছে-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের পক্ষ থেকে এমন আশ্বাস দেওয়া হলেও ওবায়দুল কাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, শিগগির বড় হামলা হতে পারে।
সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের পাশে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মনিরুজ্জামান বাদলের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। এই নেতার মৃত্যুর ২৫ তম বার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধার এই আয়োজন করে ছাত্রলীগ।
গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যা করে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের তৈরি করে। এর ছয় দিন পর কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল ফিতরের জামাতে হামলার চেষ্টা করে জঙ্গিরা। দুই পুলিশ সদস্য জীবন নিয়ে এই হামলা ঠেকালেও দেশে জঙ্গি তৎপরতার উত্থান যে আতঙ্কজনক পর্যায়ে পৌছে গেছে-একেই এর প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
তবে এই দুটি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাল্টা অভিযানে সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতার মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিতসহ সন্দেহভাজর মোট ৩১ জন জঙ্গি নিহত হন। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার অন্যতম মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত নুরুল ইসলাম মারজান এবং রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যায় জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন নিহত হন।
পুলিশ এবং র্যাবের শীর্ষ পর্যায় থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে জঙ্গিদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পথে।
তবে ওবায়দুল কাদের এমনটি ভাবছেন না। তিনি বলেন, ‘হলি আর্টিজান এবং শোলাকিয়ার মতো ঘটনা থেকে বাংলাদেশ এখনও ঠিকমত বের হতে পারেনি। কারণ বিএনপি অপশক্তিকে প্রশ্রয় দিয়ে অপকর্মের মাধ্যমে দেশকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।’
শেখ হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত চলছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত চলছে বলেও সতর্ক করে দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ভোটের রাজনীতিতে পরাজিত করতে না পেরে যেভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। একইভাবে এখন শেখ হাসিনার ঈর্ষান্বিত জনপ্রিয়তার কারণে তাকেও ভোটে হারানো যাবে না জেনে তাকেও হত্যার চক্রান্ত চলছে। তাই আমাদেরকে এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
সম্প্রতি দলকে ভারী করতে পরগাছাদেরও ছাত্রলীগ সংগঠনে ভেড়াচ্ছে জানিয়ে এই কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘অপশক্তি ও অপকর্মকারীদেরকে দলে প্রশ্রয় দেবে না, তাদের প্রশ্রয় দিলে অপকর্ম বেড়ে যাবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অপকর্মকারীদের ছাত্রলীগে জায়গা হবে না। তাদের দায় ছাত্রলীগ যেন না নেয়। এদের প্রশ্রয় দেবে না। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরে আনতে হবে।’
ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক মনিরুজ্জামান বাদলের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি সব সময় এই নেতার শূন্যতা অনুভব করেন। তিনি বলেন, ‘বাদলের ন্যায় ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে গড়ে উঠতে হবে। দলের প্রতি দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে।’
১৯৯১ সালের ৯ জানুয়ারি বিকালে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একটি কর্মসূচি চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির শহীদ মিলন চত্বরে মনিরুজ্জামান বাদলকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাদলের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এই আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
ঢাকাটাইমস