বাঞ্ছারামপুরের খাল ভরাট করায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি জলাবদ্ধতায়
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় খালে বালু ফেলে বাঁধ দেওয়ায় প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই সকল জমির আমন ধান জমির পানি সময় মত না সরায় পচে নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার তেজখালী গ্রামের আটজন ব্যক্তির নেতৃত্বে খালে ওই বাঁধ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসি। এলাকাবাসী বাঁধ অপসারন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেও মিলছে না কোন প্রতিকার। খাল ভরাট নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের তেজখালী, বিষ্ণুরামপুর, বাহেরচর (বাড়াইলচর) গ্রামের কৃষিজমি বাহেরচর মৌজায় অবস্থিত। তিন গ্রামের বৃষ্টির পানি কাজীর বিলে জমা হয় এবং তেজখালী গ্রামের ভিতর দিয়া মাকুয়ার খাল দিয়ে তিতাস নদীতে পতিত হয় এবং বর্ষার মৌসুমে এই খাল দিয়ে এই বিলে পানি ডুকে। তেজখালী গ্রামের ইউনুস মিয়া, সাহেব আলী, আতশ আলী, মিন্টু মিয়া, কনু মিয়াসহ আটজন ব্যক্তি তেজখালী গ্রামের মাঝামাঝি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাকা সড়কে খালের উপর নির্মিত ব্রিজের একপাশ ৫-৬ মাস পুর্বে বালু ফেলে ভরাট করে বাড়ি তৈরী করেছেন। এতে কাজীর বিলের পানি নদীর সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাকুয়া খালে বালু ফেলে বন্ধ করে দেওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে এবং গত মৌসুমে চাষ করা আমন ধান জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে যায়। এ বছরের রবি (শুষ্ক মৌসুমের ফসল) শস্য ও বোরো ধান চাষ করা যায়নি বলে জানান এলাকাবাসি।
সরেজমিনে গত বুধবার তেজখালী, বিষ্ণুরামপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিষ্ণুরামপুর গ্রামের দক্ষিণ, বাহেরচর গ্রামের পশ্চিমে বিস্তৃত জমিতে চার-পাঁচ ফুট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বর্ষামৌসুমের আগে চাষ করা ধনচে, আমন ধান জমিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তেজখালী গ্রামের মাঝামাঝি পাকা সড়কের ব্রিজের উত্তর পাশে খালে বালু ফেলে ভরাট করা রয়েছে। ভরাট করা জায়গায় দুটি ঘরও নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে ব্রিজটিও অকেজো হয়ে পড়েছে। বালু ফেলে বাঁধ দেওয়ায় ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে খালটি শুকিয়ে গেছে আর উত্তর পার্শ্বে পানি টইটুম্বর অবস্থায় রয়েছে।
এবিষয়ে বিষ্ণুরামপুর গ্রামের কৃষক সাহেব আলী বলেন, “তেজখালী গ্রামের ইউনুছ মিয়া ও মিন্টু মিয়াসহ আরও কয়েকজনে খালে বাঁধ দিয়া পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় কাজীর বিলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে তিনশ বিঘা কৃষি জমি পানিতে ডুবে গেছে। খালের মুখ না খুললে সারা জনমে এখানে কোনো ফসল করা যাইবো না।”
এবিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, “তেজখালী পশ্চিম পাড়া এলাকায় খালে বাঁধ দেওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। এই বিষয়ে পিআইও সাহেবকে বলেছি একটি প্রকল্প দিয়ে বাঁধ দেওয়ার জায়গায় সিমেন্টের মোটা পাইপ স্থাপন করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে।”