গত ২৮ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের এক যুবকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ছবি পোস্ট করা হয় যা মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই যুবককে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর ছড়িয়ে পড়লে ৩০ অক্টোবর সকাল থেকে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড় এবং খেলার মাঠে একাধিক ইসলামি দলের নেতারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশ চলাকালে হঠাৎ তিন থেকে ৪শ’ লোক সংঘবদ্ধ হয়ে এ ঘটনার জন্য হিন্দু পরিবারগুলোর ওপর চড়াও হয়। এসময় পুরো উপজেলা সদরের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবার এবং তাদের মন্দিরের ওপর হামলা চালায় তারা।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আবারও হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ওই এলাকায় হিন্দুদের অন্তত ছয়টি বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত হোসেন জানান, রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে হামলার এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে, শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য একটি চক্র কাজ করছে। কারা এ কাজ করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তবে এ ঘটনায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগের ৩ নেতাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বৈঠকের মাধ্যমে এই ৩ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন- নাসিরনগর সদর ইউপি চেয়ারমান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আবুল হাসেম, একই উপজেলার চাপড়তলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি সুরুজ আলী এবং ঐ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক মিয়া। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার এ বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।