আন্তর্জাতিক ডেস্ক :দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল থেকে এক ছাত্র পাঁচ দিন আগে নিখোঁজ হয়েছেন। গত শনিবার হোস্টেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুদল ছাত্রের মধ্যে মারামারির পরেই নিখোঁজ হয় নাজিব আহমেদ নামের ওই ছাত্র। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে লাগাতার ছাত্র বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভরত ছাত্ররা অভিযোগ করছেন, নাজিবের উধাও হওয়ার পেছনে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ছাত্র শাখা- অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের হাত রয়েছে।
এতদিনেও নাজিব আহমেদ-এর খোঁজ না পাওয়ায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের বুধবার রাত থেকে ২০ ঘন্টা ঘেরাও করে রেখেছিল।
নিখোঁজ ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে খুঁজে বের করার জন্য বিশেষ কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ পদস্থ কর্মকর্তারা ছাত্রদের হাতে প্রায় ২০ ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরুতে পেরেছেন।
একজন ছাত্রনেতা বলেন, পাঁচ দিন হয়ে গেলেও নাজিব আহমেদকে খুঁজে বের করতে বিশেষ কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত কয়েকদিন ধরে নাজিবের মা এখানে আছেন, উপাচার্য একবারও তার মায়ের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেননি।
নিখোঁজ নাজিব আহমেদ বায়োটেকনলজিতে এমএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। উত্তর প্রদেশের বদায়ূঁ থেকে দিল্লিতে পড়তে এসেছিলেন তিনি। হোস্টেলের একটি ভোটকে কেন্দ্র করে কিছু ছাত্র নাজিবের হোস্টেলে যায় গত শনিবার। সেখানেই মারামারি হয় দুই দলের।
নাজিবের মা ফতিমা নাফিস বিবিসি-কে বলেন, শনিবার রাতে ছেলে ফোন করেছিল তাকে। বলেছিল সে হাসাপাতালে। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ফাতিমা নাফিস বলেন, হাসপাতালে গিয়ে ছেলের জুতাও দেখতে পান, কিন্তু ছেলে সেখানে ছিল না। তার বন্ধুরাও বলতে পারেনি নাজিব কোথায়।
পুলিশ শুধু তাদের অভিযোগপত্র নিয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
নাজিব আহমেদকে খুঁজে বের করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে কিছুই করছে না, সেটা অস্বীকার করেছেন রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমার। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এছাড়াও শনিবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, সেটা জানতে একটা বিভাগীয় তদন্তও চালু হয়েছে।
ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং দিল্লি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। নাজিবের খোঁজ দিতে পারলে ৫০ হাজার রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছে দিল্লি পুলিশ।