নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি, তবে এবার তাদের সম্মেলনে অংশগ্রহণ নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন দলটির নেতারা।
শনিবার শুরু হতে যাওয়া দুইদিন ব্যাপী আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক রয়েছেন দলটির নেতারা। তবে ঠিক কোন পর্যায়ের নেতা যাবেন, তা শুক্রবার রাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্দেশনা দিতে পারেন। দলটির একটি সূত্র এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের একটি দলীয় ফোরাম আছে। সেখানে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’ শনিবার সম্মেলন হলে এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা এখনি বলা যাচ্ছে না। তারাও তো আমাদের সম্মেলনে আসেনি।’
গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে দলটিকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেয়। তারা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
পরে মৃণাল কান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমন্ত্রণ জানাতে এখানে এসেছি। দাওয়াত দিয়েছি। আশা করি তারা আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, আমাদের সম্মেলনে যোগদান করবেন।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের চর্চা ও রীতিনীতিকে সামনে রেখে আমরা আমাদের জাতীয় সম্মেলনে দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বাদ রেখেছি শুধু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, বঙ্গবন্ধু আত্মস্বীকৃতি কোনো শক্তি অথবা এদেশের সাবভৌমত্ব ও স্বাধীনতা যারা বিশ্বাস করে না। এ ছাড়া সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’
আমন্ত্রপত্র পাওয়া নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানানোয় তাদের ধন্যবাদ। আমরা খুশি হতাম যদি তারা বিএনপির সম্মেলনে আসতেন। দুঃখজনক হলে সত্য তারা শুধু আসেন-ই নি, বিভিন্নভাবে বিএনপির সম্মেলনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন।’
আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যাওয়া নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাইজিংবিডিকে জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল কাউন্সিলে যাওয়ার বিষয়ে এখনো পর্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আছে।
রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘বিএনপি যে একটা উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সেই প্রমাণ আপনারা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন পাবেন ইনশাল্লাহ। আমরা যাব।’
গত ১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানালেও দলটির কোনো প্রতিনিধি সেখানে যাননি।