পাকিস্তানে গত তিন বছরে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরমধ্যে দেশটি ২৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে। বাকি ৩০ বিলিয়ন ডলার ঋণ এসেছে বাজেট অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে। গত বুধবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রণালয়ের ঋণ বিভাগের মহাপরিচালক এহেতেশাম রাশিদ এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে তিনি জানান, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং মুদ্রা ছাপানোর ক্ষেত্রে স্বাধীনতা থাকায় এ ঋণভার পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্যে কোনো নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে না।
এহেতেশাম রাশিদ জানান, ২৫ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ এসেছে গত ২০১৩ সালের জুন থেকে এ বছরের জুন মাসের মধ্যে। এর পাশাপাশি একই সময়ে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে গত অর্থবছরে ২৮ দশমিক ২ হারে। বৈদেশিক ঋণের সুদ হিসেবে গত তিন বছরে পাকিস্তানকে পরিশোধ করতে হয়েছে ২ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। আর এ বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ঋণ নেয়া হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে।
এদিকে আইএমএফের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে পাকিস্তানে এধরনের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগের অভাব ও রফতানি ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সন্তোাষজনক থাকলেও অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন এধরনের মজুদ টেকসই নয় এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ কাঙ্খিত না হওয়ায় চড়া সুদে বিদেশি ঋণ নিতে হচ্ছে।
গত তিন বছরে পাকিস্তান সরকার সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণ বাজারে বন্ড ছেড়ে। এছাড়া আরো ১ বিলিয়ন ডলারের ‘সুকুক’ বন্ড ছাড়া হয়েছে এ মাসেই। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামিক ডেভলপমেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ এসেছে ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ। ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ এসেছে বিভিন্ন দেশ থেকে। সর্বশেষ ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়া হয়েছে আইএমএফ’এর কাছ থেকে।
অভ্যন্তরীণ বাজার থেকেও পাকিস্তানের বর্তমান সরকার ঋণ নিয়েছে ঢের। পাকিস্তানের মোট ঋণ ও দেনা এবছরের জুনেই ছাড়িয়ে গেছে ২২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন রুপি। এ তথ্য স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের। দেশটির জিডিপির অন্তত ৪ ভাগ সমপরিমাণ অর্থ অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে নেয়া ঋণের সুদ হিসেবে পরিশোধ করতে হচ্ছে। গত তিন বছরে ঋণের সুদ হিসেবে ৩ দশমিক ৪৩ ট্রিলিয়ন রুপি খরচ করতে হয়েছে। যা অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে নেয়া সরকারের ঋণের পরিমাণের চেয়ে বেশি। এবছর জুন নাগাদ পাকিস্তানের ঋণ জিডিপির অনুপাত ছিল ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ।