আন্তর্জাতিক ডেস্ক :চলতি বছরের জুলাইয়ে ক্যু প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৪০ জন সেনা সদস্যকে আটক করেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ। তুরস্কের বার্তাসংস্থার বরাত দিয়ে এই কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।তুর্কি দোগান নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কোনিয়া সেনাঘাঁটির ৪৭ জন সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে আটকাদেশ জারি করেছে দেশটির প্রশাসন। ওই সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা ওই ক্যু প্রচেষ্টার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারী।
এখন পর্যন্ত ওই ক্যু প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩২ হাজার জনেরও বেশি মানুষকে কারাবন্দি করা হয়েছে। এক লাখেরও বেশি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ বেসামরিক প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সাংবাদিকও রয়েছেন। অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের অন্তত ১৩০টি সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্যু প্রচেষ্টার পর।
চলতি বছরের ১৫ জুলাই তুর্কি সেনাবাহিনীর একাংশ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের শাসনভার নেওয়ার দাবি করে, কিন্তু পরে ওই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের ক্ষমতা আরও সংহত করার প্রক্রিয়া। রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর চলে ব্যাপক ধরপাকড়। যাকে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ‘এরদোয়ানের বেসামরিক ক্যু’ বলেও অভিহিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় তুর্কি সেনাবাহিনীর একাংশ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের শাসনভার নেওয়ার দাবি করে, যা দেশটির টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। মধ্যরাতে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়ে তুরস্কের ডানপন্থী সরকার উচ্ছেদের দাবি করে দেশটির সেনাবাহিনীর একাংশ। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে’ সশস্ত্র বাহিনী তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেছে। টেলিভিশনের পর্দায় পড়ে শোনানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এখন ‘শান্তি পরিষদ’দেশ চালাবে এবং কারফিউ ও সামরিক আইন জারি থাকবে। একই সঙ্গে তুরস্কের বিদ্যমান বৈদেশিক সব সম্পর্ক বহাল থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রাধান্য পাবে। কারফিউর বিরোধিতা করে এরদোয়ানের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
শেষ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সব অংশের সমর্থন না থাকায় এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তৎপরতায় জনগণ রাস্তায় নেমে এলে বিদ্রোহী সেনাদের উদ্যোগ ভেস্তে যায়।