আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরে ভেঙ্গে পড়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের মানব নেটওয়ার্ক। এতে ব্যাপক গোয়েন্দা তথ্যহীনতার মধ্যে পড়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
গত ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদীনের জনপ্রিয় কমান্ডার বুরহান মুজাফফর ওয়ানি নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে তিনমাসব্যাপী অব্যাহত বিক্ষোভ প্রতিবাদ ও সহিংসতা থেকে দেখা দিয়েছে এ তথ্যহীনতা।
বারামুল্লার উরি সেক্টরে সেনাবাহিনীর ব্রিগেড সদর দফতরে হামলায় ১৭ জওয়ান এবং ৪ গেরিলা নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম।
২০১৪ সাল থেকে কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলে চালানো গেরিলা হামলাগুলোর মধ্যে গতকালেরটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে দাবি করা হয়েছে।
ওয়ানির নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিবাদী জনতার মধ্যে সংঘর্ষে গত তিনমাসে প্রায় ১০০ নিহত এবং ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। ছররা গুলিতে শতাধিক যুবকের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়েছে। আহত অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কাশ্মীরে তরুণ-যুবকদের মৃত্যুর মিছিল প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় দিনের পর দিন কারফিউ বলবত থাকায় সাধারণ মানুষের পক্ষে ঘর থেকে বের হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে সমস্যায় পড়েছে নিরাপত্তা এবং সেনা গোয়েন্দা সংস্থা। এতে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে থাকা ভারতীয় ইনফরমারদের চলাফেরাও বাধা নিষেধের মধ্যে পড়েছে।
তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে ইনফরমাররা আর গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছে না এবং এতে ব্যাপক যোগাযোগ শুন্যতা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে যেয়ে চিহ্নিত হওয়া এবং প্রাণ হারানোর ভয় রয়েছে ইনফরমারদের। এতে বিশেষ কোনো তথ্য যোগাড় করতে সমস্যার মুখে পড়ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে ফোন ব্যবহার করে না। তাদের চলাচল সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য ইনফরমারদের মাধ্যমেই পেয়ে থাকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কাশ্মীরে চলমান আন্দোলনের মুখে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের এই মানব নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানান তিনি।