কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-আগরতলা আন্তর্জাতিক মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউতলী এন্ডারসন প্রথম সেতুর ওপর ও কাউতলী মোড়ে সড়ক দখল করে অবৈধভাবে অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। এতে এসব স্থানে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের কাউতলী মোড় থেকে একটু দূরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া উইজডম স্কুল অ্যান্ড কলেজ; কাউতলী মোড় থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে জেলা জজ আদালত, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, গণপূর্ত বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সিভিল সার্জন, জেলা মৎস্য, জেলা নির্বাচন কার্যালয়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় অবস্থিত। জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ এসব কার্যালয়ে প্রতিদিন আসে। কিন্তু সেতুর ওপর গড়ে ওঠা সিএনজির অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনকে ওই পথে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কাউতলী মোড়ের সৌধ হিরন্ময় এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশেই সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের অবৈধ স্ট্যান্ড দেখা গেছে। ওই জায়গা থেকে আনুমানিক দুই শ গজ সামনে কাউতলী এন্ডারসন খালের প্রথম সেতুর (পুরাতন সেতু) উত্তর দিকের এলাকার রাস্তা দখল করে গড়ে উঠেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড। পাশেই কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের এন্ডারসন দ্বিতীয় সেতু। সেতু এলাকায় মহাসড়কের পশ্চিমে সওজের আবাসিক কলোনি এবং পূর্ব দিকে কাউতলী কাঁচাবাজার। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরাতন সেতুর ওপর দুই পাশে সিএনজি অটোরিকশা সারি করে রাখা হয়। সেখানে সিএনজি রাখার পর মাঝখানের একটু জায়গা দিয়ে অটোরিকশা ও মানুষ আসা-যাওয়া করে। অটোরিকশা থাকায় প্রথম সেতুর ওপর দিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোনো যান চলাচল করতে পারছে না।
কাউতলী এলাকার বাসিন্দা মাকবুল হাসান বলেন, সেতুর ওপর সিএনজি স্ট্যান্ড থাকায় সারা দিনই এই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। বড় যানবাহন আটকা পড়ে। আটকে থাকা গাড়ির হর্নের কারণে প্রচুর শব্দ হয়। রাস্তার পশ্চিম পাশে সওজের কলোনির ভেতরে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় রাস্তা পার হতে ভয় লাগে।
পৌর এলাকার ভাদুঘরের বাসিন্দা জোবায়ের আহমেদ ও মুন্নি আক্তার বলেন, এখানে অটোরিকশার স্ট্যান্ড থাকায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্ট্যাণ্ডের কারণে তৈরি হচ্ছে যানজট।
সিএনজি মালিক সমিতি কাউতলী স্টেডিয়াম শাখার সভাপতি খোকন মিয়া বলেন, বিষয়টি স্থানীয় সাংসদসহ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জায়গা না থাকায় কাউতলী পুরোনো সেতুর ওপর অস্থায়ী স্ট্যান্ড করা হয়েছে। জায়গা করে দিলে স্ট্যান্ড এখান থেকে সরানো হবে।
সওজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহতেশাম রশিদ বলেন,‘আমরা বিষয়টি লক্ষ করেছি। স্ট্যান্ড সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা কাজও করছেন। তবে প্রথম সেতুটি হালকা ও মাঝারি যানচলাচলের উপযোগী রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। তাদের (অটোরিকশার) জন্য একটি জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছিল। জায়গাটি ছোট বলে সেখানে সিএনজি মালিক সমিতির সদস্যরা যেতে রাজি হননি। বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই আবার আলোচনায় বসব।’
প্রথম আলো