সোমবার, ৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ইং ২৩শে মাঘ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ওমানে নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীরা

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ওমানে যাওয়া গৃহকর্মীরা সেখানে একটি নিপীড়নমূলক পরিবেশে আটকে আছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিও)। ওমানি নিয়োগকর্তারা তাদের প্রতি নানা ধরনের নির্যাতন করে থাকে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ওমানে-নিপীড়নের-শিকার-বাংলাদেশি-নারী-গৃহকর্মীরা

 

এইচআরডব্লিও’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এমনকি অনেক গৃহকর্মীকেই ‘আধুনিক দাসত্ব’র জীবন বেঁছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আরব উপসাগরীয় দেশগুলোতে গৃহকর্মীদের অবস্থা নিয়ে বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে এইচআরডব্লিও। ২০১৫ সালের মে মাস থেকে ৫৯ জন নারীর সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে এটি প্রস্তুত করা হয়।

 

 

 

‘আই ওয়াজ সোল্ড: অ্যাবিউজ অ্যান্ড এক্সপ্লোয়েটেশন অব মাইগ্রেন্ট ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স ইন ওমান’ শিরোনামে প্রকাশিত ৬৮ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গৃহকর্মীদের ওপর নিপীড়নের মধ্যে রয়েছে- প্রহার, যৌন নিপীড়ন, বেতন না দেয়া এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করানো। যারা পালিয়ে আসে তাদেরও পালানোর অপরাধে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।

ওমানে বাংলাদেশি এক নারী গৃহকর্মী আসমা বলেন, ‘আমি ভোর সাড়ে চারটায় কাজ শুরু করতাম এবং দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করতাম। এই সময়ের মধ্যে আমি একটুও অবসর পেতাম না। দুইটি ফ্লোরের ২০টি কক্ষে আমাকে কাজ করতে হতো। খাবার দেয়া হতো না। আমি চলে যেতে চাইলে মালিক বলতো, আমি তোমাকে দেড় হাজার রিয়েল দিয়ে দুবাই থেকে কিনে এনেছি। সেটা পরিশোধ করতে পারলে চলে যাও।’

বাচ্চাদের দেখাশোনা, খাবার রান্না এবং ঘরবাড়ি পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে গৃহকর্মীদের ওপর নির্ভর করতে হয় বিদেশি পরিবারগুলোর। অথচ এসব গৃহকর্মী নিজেদের সন্তান এবং পরিবার চালানোর জন্য যে বেতনের ওপর নির্ভরশীল তা তাদের ঠিকমতো দেয়া হয় না। বরং শিকার হতে হয় নানা নিপীড়নের।

বর্তমানে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং ইথিওপিয়া থেকে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি নারী গৃহকর্মী ওমানে কর্মরত রয়েছে। বড় অঙ্কের বেতন আর কাজের সুন্দর পরিবেশের নিশ্চয়তা দিয়েই তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন। সেখানে যাওয়ার পরই তারা বুঝতে পারে, প্রকৃতপক্ষে তাদের আটকে রাখা হয়েছে।