ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ : বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী চারটি ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতা ঠেকাতে নানান পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে রাজনৈতিকগুলোর সঙ্গে বসার কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় এই সব পদক্ষেপ কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে ইসির কর্মকর্তাদেরও সংশয় রয়েছে।জানা যায়, ভোট কেন্দ্র দখল ও জালভোট ঠেকাতে প্রতিটি ইউপিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্য বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। একই সঙ্গে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়াতে স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ র্যা ব-পুলিশ ও বিজিবির টহল বাড়ানো হচ্ছে। ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ধাপের ভোটের আগেই এমন শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে ইসি।
এজন্য ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বুধবার জরুরি বৈঠকেও করেছে কমিশন।ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইউপি নির্বাচনে বিএনপি নেতাদের মাঠে নামার ঘোষণায় তৃণমূলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ধাপের নির্বাচনগুলোয় পরিস্থিতি আরো অবনতির আশঙ্কা আছে।
২৩ এপ্রিল তৃতীয় ও ৭ মে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন হবে। এখন পর্যন্ত পঞ্চম ও ষষ্ঠ ধাপের তফসিল ঘোষণা হয়নি। তবে পঞ্চম ধাপে ২৮ মে এবং ৪ জুন ষষ্ঠ ধাপের ভোটের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা আছে।এদিকে প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনটিকে ঘিরে গেল দুইটি ধাপে ৪২ জনের প্রাণহানি ও ৫ সহস্রাধিক লোক আহত হওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী।
ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ। ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলগুলো পর্যন্ত নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে। অনেকে নির্বাচন বাতিল করাসহ নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগের দাবি তোলেন।ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৪ হাজারেরও বেশি ইউনিয়নে ৪২ হাজার জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের লক্ষ্যে শুরু হয় এ ইউপি নির্বাচন। নির্বাচনের আগেই আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে রক্তপাতের আশঙ্কা করে প্রতিবেদন দিয়েছিল কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার কোনো সুপারিশই আমলে নেয়নি ইসি।
পরবর্তী ধাপের ইউপনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার পরামর্শ দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।ইসির সঙ্গে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ রাজনৈতিক দলগুলোর বসা পরমর্শ দেয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ইসির একজন কর্মকর্তা জানান, দলীয়ভাবে হওয়া ইউপি নির্বাচনে গোলযোগ কমাতে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা। কিন্তু ইসি তা নাকচ করে দেয়।
ইসির বক্তব্য- ‘ইতোমধ্যে ইউপি নির্বাচন শুরু হয়েছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসা যাবে না।’তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায় সহিংসতা বেড়েছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না হলে সহিংসতা ঠেকানো সম্ভব নয়।