ক্যান্সারের রহস্য মমিতে !
---
যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে প্রাপ্ত মমিগুলো বিস্মকর ইতিহাস ও সভ্যতার জানান দিয়েছে। তবে বিশেষ করে প্রাচীন বিশ্বের চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস উঠে এসেছে মমির মাধ্যমে। পিএলওএস ওয়ান-এর নতুন এক গবেষণায় আঠারো শো শতকের এক হাঙ্গেরিয়ান মমির কথা তুলে ধরা হয়েছে। ওই মমিতে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের জেনেটিক অবস্থা খুঁজে পাওয়া গেছে।
তেল আবিব ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজির গবেষক রিনা রোজিন-আরবেসফিল্ড জানান, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার আধুনিক যুগের অন্যতম স্বাস্থ্যগত হুমকি। এর একটা জেনেটিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল বলে জানতাম আমরা। কিন্তু আগের মানুষের মাঝে এপিসি মিউটেশন ঘটেছিল কিনা তা আমরা জানতে পারছিলাম না। এ ছাড়া আধুনিক যে মিউটেশন দেখা যায়, অতীতে তা ভিন্ন ছিল কিনা জানাটা জরুরি।
১৯৯৫ সালে হাঙ্গেরির ডোমিনিকান চার্চের একটি সিলকৃত প্রাচীন সমাধিস্থল থেকে ২৬৫টি মমি আবিষ্কার করা হয়। কবরস্থানটি ১৭৩১-১৮৩৮ সালের মধ্যে ব্যবহার করা হতো। মধ্যবিত্ত এবং ক্লেরিকদের মমির সংরক্ষণের জন্যে এখানে অপেক্ষাকৃত কম তাপমাত্রা, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা এবং আর্দ্রতা রক্ষার ব্যবস্থা করা ছিল।
সেখানে প্রাপ্ত ৭০ শতাংশ মমি দারুণভাবে মমি করা হয়েছিল। সেখান থেকে টিস্যুর নমুনাসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। এসব মমি এখন হাঙ্গেরিয়ান ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম-এ সংরক্ষিত আছে।
১৮ শো শতকের হাঙ্গেরিয়ান মমিমে টিউবারক্লোরোসিসের নমুনা পাওয়া গেছে তথ্যটা পেয়েই আগ্রহী হয়ে ওঠেন রোজিন। নেচার কমিউনিকেশন এবং ইউনিভার্সিটি অব ওয়ালউইক-এর টিবি গবেষণায় দেখা যায়, ওই মমিতে ১৪টি টিউবারক্লোরোসিস জেনোম পাওয়া গেছে। যখন ইউরোপে টিবি ছড়িয়ে পড়েছে, তখনও এ রোগটি যথেষ্ট হারে দেখা গিয়েছিল।
গবেষকরা ২০টি মমি থেকে ৫১টি নমুনা সংগ্রহ করেন। জেনেটিক পরীক্ষায় এদের মধ্যে এপিসি মিউটেশন জিন শনাক্তের চেষ্টা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষক ইলা এইচ সাকলান জানান, এদের মধ্যে একটি মমির দেহে জেনেটিক মিউটেশন খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে আরো বিস্তর গবেষণার জন্যে আরো টিস্যু সংগ্রহ করতে হবে।
খুব কম রোগ কঙ্কালে আক্রমণ করে। তবে টিস্যুতে রোগের যাবতীয় লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যায়। তাই এই মমিটির টিস্যু সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারলে আরো তথ্য মিলবে।