মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য ওসমানী উদ্যান!
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর উদ্যান ও পার্কগুলোর বেহাল দশার পাশাপাশি অপরাধ সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ পার্ক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জৌলুস হারাচ্ছে। জনজট, যানজট আর ইট কংক্রিটে ঘেরা দালান থেকে স্বস্তি পেতে উদ্যানে বসে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া খোঁজাও দায়। উদ্যানগুলোতে হকার, মাদকসেবী ও যৌনকর্মীদের অভয়ারণ্যয় পরিণত হয়েছে।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্থান জিরো পয়েন্টে সংলগ্ন ওসমানী উদ্যান। উদ্যানটির দক্ষিণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় (নগরভবন) এবং উত্তরে বাংলাদেশ সচিবালয়। ঢাকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর অন্যতম এই উদ্যানটি এখন হকার, মাদকসেবী, যৌনকর্মীদের অভয়ারণ্য।
সরেজমিনে দেখা যায়, উদ্যানের প্রবেশ পথেই বসানো হয়েছে কয়েকটি চা-পান সিগারেটের দোকান। এছাড়া লাইন ধরে বসে আছে বিভিন্ন হকার। আর একটু ভেতরে যেতেই দেখা মিললো মাদকসেবীদের। দলবেধে খোলা জায়গায় বসেই মাদক সেবন করছে তারা। মাতাল অবস্থায় উদ্যানের যেখানে সেখানে শুয়ে বা ঘুমিয়ে পড়েছে।
এছাড়া উদ্যানের বেশির ভাগ জায়গা জুড়েই ভাসমান মানুষরা শুয়ে আছে বা ঘুমাচ্ছে। আবার কেউ কেউ সিরিঞ্জ দিয়ে শরীরের নেশা জাতীয় ইনজেকশন গ্রহণ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হকারদের চা-পান ও সিগারেটের আড়ালে চলে মাদক বিক্রিও। আর হাতের কাছে বিনা পরিশ্রমে নানা ধরনের মাদক দ্রব্য পেয়ে যায় মাদকসেবীরা। এছাড়া উদ্যানের ভিতরে মুক্তিযুদ্ধে ১১টি সেক্টর, বাংলাদেশের জেলা ভিত্তিক মানচিত্র দিয়ে ১১টি স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে। যার প্রতিটিই পড়ে আছে অবহেলায় ও অযন্তে।
ওসমানী উদ্যানে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়ের আল হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, “পার্ক বা উদ্যানের এমন পরিবেশ হওয়া উচিত যেটা আমাকে আকর্ষণ করবে। একদিন গেলে দ্বিতীয় দিন আবার সেখানে যেতে ইচ্ছে করবে। কিন্তু এখানকার পরিবেশ খুব খারাপ। মাদকসেবীরা পুরো উদ্যান দখল করে রেখেছে।”
উদ্যানের ভেতরে দর্শনার্থী কম থাকায় ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না জানিয়ে চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, নোংরা পরিবেশের পাশাপাশি মাদকসেবী ছিনতাইকারী থাকার কারণে উদ্যানে বেশি লোকের সমাগম হয় না।
উদ্যানটিতে মাদকসেবী, ছিনতাইকারী ও হকারদের কারণে দর্শনার্থী কমে গেছে বা আসেন না- এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালেদ আহমেদের কাছে জানতে চাইলে জাগো নিউজে তিনি বলেন, “উদ্যানে মাদকসেবী, হকারদের উচ্ছেদ করতে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
একই সঙ্গে উদ্যানে রাতে নিরাপত্তার জন্য ল্যাম্পপোস্ট এবং লাইটিং এর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাশাপাশি সৌন্দর্য রক্ষায় নেয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। সূত্র: জাগো নিউজ