g বাংলাদেশকে সৌদি জোটে দেখে বিস্মিত রাশিয়া | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ২৯শে জুলাই, ২০১৭ ইং ১৪ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে সৌদি জোটে দেখে বিস্মিত রাশিয়া

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০১৬

---

9সৌদি আরবের নেতৃত্বে সামরিক জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্রথম পর্যায়ে রাশিয়া বিস্মিত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার নিকোলায়েভ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময়ে রাষ্ট্রদূত আরও জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রের বিষয়ে বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। বাংলাদেশে চার বছর দায়িত্ব পালন করার পর আগামী ১০ মার্চ ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন রাষ্ট্রদূত নিকোলায়েভ। ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নিয়মিত আয়োজন ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পটি এখন বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। আমি খুবই খুশি যে, দেশের বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসনে পারমাণবিক এ বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের উদ্যোগে শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিরও সমর্থন আছে। আমার যতদূর মনে পড়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের পরিকল্পনায় তাদের সমর্থন রয়েছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট বর্তমানে কার্যকারিতা হারিয়েছে বলে মনে করেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, বর্তমানে সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের জন্য তিনটি জোট রয়েছে। এর মধ্যে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট একটি। তবে সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ যৌথ বিবৃতির পর সৌদি জোট তার কার্যকারিতা হারিয়েছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এই সামরিক জোটে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ায় রাশিয়া বিস্মিত ছিল। অবশ্য ঢাকার পররাষ্ট্র দফতর থেকে মস্কোকে একাধিকবার জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের মাধ্যমে ছাড়া অন্য কোনোভাবে বিশ্বের কোথাও বাংলাদেশের সামরিক ট্রুপ মোতায়েন করা হবে না। রাশিয়া কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ইস্যুতে রাশিয়া কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়া পরীক্ষিত বন্ধু। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে রাশিয়া বাংলাদেশের সমর্থন পেয়ে আসছে। সামরিক খাত ও বিভিন্ন খাতে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার সুযোগ রয়েছে। নিকোলায়েভ বলেন, গত বছরটি বিশ্ব কূটনীতির জন্য ছিল চ্যালেঞ্জিং। বাংলাদেশও বিদেশি হত্যাকাণ্ড, উপর্যুপরি ভ্রমণ সতর্কতা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর পরপর বিবৃতির পর বিশ্ব কূটনীতির এ উত্তাপ গত বছরে পেয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে দেখি। ২০২১ ও ২০৪০ সালকে ঘিরে নেওয়া লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে বাংলাদেশ সমর্থ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। রাশিয়া সবসময় এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে থাকবে। রাষ্ট্রদূত হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আলেকজান্ডার নিকোলায়েভের। তিনি বলেন, এ সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কে দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে। সেই সঙ্গে কোনো জাতির টেকসই উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি খাতে রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়েছে। সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরস্ফুিটিত হয়েছে। শিক্ষায় সহযোগিতা উদীয়মান। দুই দেশই আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে একে অপরকে সহায়তা করছে। বাংলাদেশ-রাশিয়ার সম্পর্ক ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, গত চার বছরে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই দেশ এখন উভয়ের লাভজনক অবস্থানের ভিত্তিতে সম্পর্ককে উপভোগ করছে। এই ঘনিষ্ঠতা দিন দিন বাড়ছে। রাজনৈতিক বন্ধনও দিন দিন সুদৃঢ় হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক মধুর এবং এটি এমন অবস্থায় আছে যে, যে কোনো সরকারের সময়ই বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সম্পর্ক এগিয়ে যাবে। ডিক্যাব সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টি ও সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকার গণমাধ্যমগুলোর কূটনৈতিক সংবাদদাতারা।

এ জাতীয় আরও খবর